১০:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

অনলাইনে সিসা বিক্রি:বাসায় দিতে গিয়ে ডেলিভারিম্যান ডিএনসির হাতে আটক,জিজ্ঞাসাবাদে মিলল বিপুল সিসা

  • আপডেট: ০৬:৩৯:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৮০০৩

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় রাজধানীর অধিকাংশ সিসা বার বন্ধ হয়ে যাওয়ার কৌশলে অনলাইনে সিসা বিক্রি শুরু করেছিল একটি চক্র। ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের গোপন গ্রুপ ও ইনবক্সে নিচ্ছিলো সিসার অর্ডার,এরপর রাজধানীর যেকোনো স্থানে ‘হোম ডেলিভারি’। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই অনলাইন কৌশলই কাল হলো কারবারিদের জন্য।

সম্প্রতি মাদক চক্রটির সন্ধান পেয়ে ফাঁদ পাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখার একটি বিশেষ গোয়েন্দা ইউনিট। চক্রটিকে ধরতে প্রথমে অনলাইনে সিসার অর্ডার করে ডিএনসি টিম। এরপর চাহিদা অনুযায়ী দেওয়া জায়গায় মাদক ডেলিভারি দিতে এসে ধরা পড়ে চক্রের এক সদস্য। এরপর তার দেওয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে বিপুল সিসাসহ মূলহোতাসহ গ্রেফতার করে ডিএনসি। অভিযানে মোট ১৮ কেজি সিসা,একাধিক হুক্কা সেট,সিসা সেবনে ব্যবহৃত চারকোল,সিসিটিভি ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন– ডেলিভারিম্যান মো.আশিকুর রহমান সামি (১৯) ও চক্রের মূল নিয়ন্ত্রক আব্দুল আলিম ওয়াসিফ (২৮)।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে সেগুনবাগিচায় সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ।

তিনি বলেন,ডিএনসির গোয়েন্দা বিভাগ দীর্ঘদিন যাবত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মাদক পাচারের বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি করে আসছে এবং এই গোয়েন্দা বিভাগের তৎপরতায় বিভিন্ন সময় বেশ কিছু চালান জব্দ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে, ডিএনসি’র কাছে গোপন তথ্য ছিল যে একটি চক্র ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে দেশব্যাপী অবৈধ মাদকদ্রব্য সিসা সরবরাহ করছে।

রাজধানীর বিভিন্ন ‘সিসা বার’-এ কঠোর নজরদারি ও অভিযান চালানোর ফলে চক্রগুলো এখন নতুন কৌশলে অনলাইন অর্ডার, সোশ্যাল মিডিয়া পেজ ও গোপন ডেলিভারি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সিসা সরবরাহ করছে। এই উদীয়মান প্রবণতা বন্ধে ডিএনসি বিশেষ গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।

ডিএনসি গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীতে সক্রিয় একটি অনলাইনভিত্তিক সিসা সরবরাহ চক্র শনাক্ত করে। চক্রটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনবক্স ও মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে অর্ডার নিত।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ বদরুদ্দীনের তত্ত্বাবধানে গত ১৬ নভেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখার একটি বিশেষ টিম উপ-পরিচালক মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে ঢাকা গোয়েন্দা ইউনিট ছদ্মবেশে অভিযানে নামে।

ছদ্মবেশে ক্রেতা সেজে ডিএনসি সদস্যরা প্রথমে চক্রের আশিকুর রহমান সামি (১৯) নামে একজন ডেলিভারিম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। হাতিরঝিল এলাকায় পণ্য ডেলিভারির সময় ও স্থান নির্ধারণ করেন। গত ১৬ নভেম্বর রাত ১১টায় হাতিরঝিল মহানগর প্রকল্প এলাকায় নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সামি সিসার জারভর্তি ব্যাগ নিয়ে উপস্থিত হলে ডিএনসি দল তাকে ছদ্মবেশী ক্রেতার ফাঁদে ফেলে আটক করে। তার স্কুলব্যাগ তল্লাশিতে ২ কেজি AL FAKHER সিসা পাওয়া যায়।

ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সামি জানায়,তিনি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অনলাইন অর্ডার অনুযায়ী সিসা সরবরাহের ডেলিভারি বয়, এবং তিনি শুধু একাই নন, এটির পিছনে একাধিক ব্যক্তি কাজ করছে। তিনি আরও স্বীকার করেন যে, এ চক্রের মূল নিয়ন্ত্রক আব্দুল আলিম ওয়াসিফ (২৮)।

সামির দেওয়া তথ্য যাচাই করে ডিএনসি দল দ্রুত উত্তর বাড্ডার বিটিআই প্রিমিয়াম প্লাজায় অবস্থিত ‘ইনোভেট’ আইটি বেইজ দোকান শনাক্ত করে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে। ওই রাতেই দোকানে সন্দেহজনক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণের পর দোকানের মালিক আব্দুল আলিম ওয়াসিফকে (২৮) আটক করে।

পরবর্তীতে স্টোর রুম তল্লাশি করে উদ্ধার করা হয়, ১৬ কেজি AL FAKHER সিসা (১৬ জার),৩টি হুক্কা সেট, ২টি পাইপ, চারকোল ১০ প্যাকেট, আইফোন–১৩,৫টি ওয়াইফাই সিসিটিভি ক্যামেরা।

ডিএনসি মহাপরিচালক হাসান মারুফ দাবি করে বলেন, ওয়াসিফ জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে,তিনি অনলাইনে অর্ডার নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সিসা সরবরাহ করতেন এবং সামি তার হয়ে ডেলিভারি দিত। জিজ্ঞাসাবাদে ওয়াসিফ স্বীকার করে যে,সে দীর্ঘদিন ধরে আইটি পণ্য বিক্রির আড়ালে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গোপনে সিসা সরবরাহ করতো এবং তার একটি নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল।

গ্রেফতারকৃত দুই আসামির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে; শিগগিরই আরও অভিযান পরিচালিত হবে বলে জানান হাসান মারুফ।

অভিযান সম্পর্কে ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিচালক মেহেদী হাসান জানান,নজরদারি ও অভিযানের কারণে অফলাইনে বন্ধ রেখে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে সিসা অনলাইনে বিক্রি করছিল একটি চক্র। আমরা প্রথমে সেই পেইজটাকে শনাক্ত করি। সেখানকার বিজ্ঞাপনগুলো অনুসরণ করি। বিজ্ঞাপনগুলো সব জায়গায় ভিজিবল না। কারণ তাদের নিজস্ব কিছু গ্রুপ আছে। সেসব গ্রুপের মধ্যে বিজ্ঞাপনগুলো প্রচার করা হয়।

মেহেদি জানান,চক্রটিকে অনুসরণ করতে আমরা প্রথমেই গ্রুপে মেম্বার হয়েছি,ছদ্মবেশে সে গ্রুপের মেম্বার হয়ে বিজ্ঞাপনগুলো দেখি, নিয়ম মেনে আমরা নিজেরাই ক্রেতার সেজে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, ফ্লেভার সম্বন্ধে জানতে হয়, তারা কিছু কোড নেম ব্যবহার করে। সেগুলোও আমাদের জানতে হয়েছে। আমরা অনলাইনে অর্ডার করার পর চক্রটি আমাদের অর্ডারকে এক্সেপ্ট করে।

তারা ভিডিও পাঠিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন ধরনের স্যাম্পেল দেখাচ্ছিল আমাদের। এরপর আমরা স্যাম্পল অ্যাপ্রুভ করার পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়,দাম,ডিসকাউন্ট,এক্সপায়ার ডেট জানতে চাই। যাতে করে প্রকৃত ক্রেতা মনে করে। কোয়ালিটি,ব্র্যান্ড,ফ্লেভার নিশ্চিত করে অর্ডার করার পর আমরা দুইভাগে অভিযানে নামি। মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় ডেলিভারি দেয়। তখন প্রথমে ডেলিভারিম্যানকে পরে মূলহোতাকে গ্রেফতার করা হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

অনলাইনে সিসা বিক্রি:বাসায় দিতে গিয়ে ডেলিভারিম্যান ডিএনসির হাতে আটক,জিজ্ঞাসাবাদে মিলল বিপুল সিসা

আপডেট: ০৬:৩৯:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় রাজধানীর অধিকাংশ সিসা বার বন্ধ হয়ে যাওয়ার কৌশলে অনলাইনে সিসা বিক্রি শুরু করেছিল একটি চক্র। ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের গোপন গ্রুপ ও ইনবক্সে নিচ্ছিলো সিসার অর্ডার,এরপর রাজধানীর যেকোনো স্থানে ‘হোম ডেলিভারি’। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই অনলাইন কৌশলই কাল হলো কারবারিদের জন্য।

সম্প্রতি মাদক চক্রটির সন্ধান পেয়ে ফাঁদ পাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখার একটি বিশেষ গোয়েন্দা ইউনিট। চক্রটিকে ধরতে প্রথমে অনলাইনে সিসার অর্ডার করে ডিএনসি টিম। এরপর চাহিদা অনুযায়ী দেওয়া জায়গায় মাদক ডেলিভারি দিতে এসে ধরা পড়ে চক্রের এক সদস্য। এরপর তার দেওয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে বিপুল সিসাসহ মূলহোতাসহ গ্রেফতার করে ডিএনসি। অভিযানে মোট ১৮ কেজি সিসা,একাধিক হুক্কা সেট,সিসা সেবনে ব্যবহৃত চারকোল,সিসিটিভি ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন– ডেলিভারিম্যান মো.আশিকুর রহমান সামি (১৯) ও চক্রের মূল নিয়ন্ত্রক আব্দুল আলিম ওয়াসিফ (২৮)।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে সেগুনবাগিচায় সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ।

তিনি বলেন,ডিএনসির গোয়েন্দা বিভাগ দীর্ঘদিন যাবত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মাদক পাচারের বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি করে আসছে এবং এই গোয়েন্দা বিভাগের তৎপরতায় বিভিন্ন সময় বেশ কিছু চালান জব্দ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে, ডিএনসি’র কাছে গোপন তথ্য ছিল যে একটি চক্র ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে দেশব্যাপী অবৈধ মাদকদ্রব্য সিসা সরবরাহ করছে।

রাজধানীর বিভিন্ন ‘সিসা বার’-এ কঠোর নজরদারি ও অভিযান চালানোর ফলে চক্রগুলো এখন নতুন কৌশলে অনলাইন অর্ডার, সোশ্যাল মিডিয়া পেজ ও গোপন ডেলিভারি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সিসা সরবরাহ করছে। এই উদীয়মান প্রবণতা বন্ধে ডিএনসি বিশেষ গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।

ডিএনসি গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীতে সক্রিয় একটি অনলাইনভিত্তিক সিসা সরবরাহ চক্র শনাক্ত করে। চক্রটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনবক্স ও মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে অর্ডার নিত।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ বদরুদ্দীনের তত্ত্বাবধানে গত ১৬ নভেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখার একটি বিশেষ টিম উপ-পরিচালক মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে ঢাকা গোয়েন্দা ইউনিট ছদ্মবেশে অভিযানে নামে।

ছদ্মবেশে ক্রেতা সেজে ডিএনসি সদস্যরা প্রথমে চক্রের আশিকুর রহমান সামি (১৯) নামে একজন ডেলিভারিম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। হাতিরঝিল এলাকায় পণ্য ডেলিভারির সময় ও স্থান নির্ধারণ করেন। গত ১৬ নভেম্বর রাত ১১টায় হাতিরঝিল মহানগর প্রকল্প এলাকায় নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সামি সিসার জারভর্তি ব্যাগ নিয়ে উপস্থিত হলে ডিএনসি দল তাকে ছদ্মবেশী ক্রেতার ফাঁদে ফেলে আটক করে। তার স্কুলব্যাগ তল্লাশিতে ২ কেজি AL FAKHER সিসা পাওয়া যায়।

ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সামি জানায়,তিনি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অনলাইন অর্ডার অনুযায়ী সিসা সরবরাহের ডেলিভারি বয়, এবং তিনি শুধু একাই নন, এটির পিছনে একাধিক ব্যক্তি কাজ করছে। তিনি আরও স্বীকার করেন যে, এ চক্রের মূল নিয়ন্ত্রক আব্দুল আলিম ওয়াসিফ (২৮)।

সামির দেওয়া তথ্য যাচাই করে ডিএনসি দল দ্রুত উত্তর বাড্ডার বিটিআই প্রিমিয়াম প্লাজায় অবস্থিত ‘ইনোভেট’ আইটি বেইজ দোকান শনাক্ত করে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে। ওই রাতেই দোকানে সন্দেহজনক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণের পর দোকানের মালিক আব্দুল আলিম ওয়াসিফকে (২৮) আটক করে।

পরবর্তীতে স্টোর রুম তল্লাশি করে উদ্ধার করা হয়, ১৬ কেজি AL FAKHER সিসা (১৬ জার),৩টি হুক্কা সেট, ২টি পাইপ, চারকোল ১০ প্যাকেট, আইফোন–১৩,৫টি ওয়াইফাই সিসিটিভি ক্যামেরা।

ডিএনসি মহাপরিচালক হাসান মারুফ দাবি করে বলেন, ওয়াসিফ জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে,তিনি অনলাইনে অর্ডার নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সিসা সরবরাহ করতেন এবং সামি তার হয়ে ডেলিভারি দিত। জিজ্ঞাসাবাদে ওয়াসিফ স্বীকার করে যে,সে দীর্ঘদিন ধরে আইটি পণ্য বিক্রির আড়ালে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গোপনে সিসা সরবরাহ করতো এবং তার একটি নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল।

গ্রেফতারকৃত দুই আসামির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে; শিগগিরই আরও অভিযান পরিচালিত হবে বলে জানান হাসান মারুফ।

অভিযান সম্পর্কে ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিচালক মেহেদী হাসান জানান,নজরদারি ও অভিযানের কারণে অফলাইনে বন্ধ রেখে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে সিসা অনলাইনে বিক্রি করছিল একটি চক্র। আমরা প্রথমে সেই পেইজটাকে শনাক্ত করি। সেখানকার বিজ্ঞাপনগুলো অনুসরণ করি। বিজ্ঞাপনগুলো সব জায়গায় ভিজিবল না। কারণ তাদের নিজস্ব কিছু গ্রুপ আছে। সেসব গ্রুপের মধ্যে বিজ্ঞাপনগুলো প্রচার করা হয়।

মেহেদি জানান,চক্রটিকে অনুসরণ করতে আমরা প্রথমেই গ্রুপে মেম্বার হয়েছি,ছদ্মবেশে সে গ্রুপের মেম্বার হয়ে বিজ্ঞাপনগুলো দেখি, নিয়ম মেনে আমরা নিজেরাই ক্রেতার সেজে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, ফ্লেভার সম্বন্ধে জানতে হয়, তারা কিছু কোড নেম ব্যবহার করে। সেগুলোও আমাদের জানতে হয়েছে। আমরা অনলাইনে অর্ডার করার পর চক্রটি আমাদের অর্ডারকে এক্সেপ্ট করে।

তারা ভিডিও পাঠিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন ধরনের স্যাম্পেল দেখাচ্ছিল আমাদের। এরপর আমরা স্যাম্পল অ্যাপ্রুভ করার পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়,দাম,ডিসকাউন্ট,এক্সপায়ার ডেট জানতে চাই। যাতে করে প্রকৃত ক্রেতা মনে করে। কোয়ালিটি,ব্র্যান্ড,ফ্লেভার নিশ্চিত করে অর্ডার করার পর আমরা দুইভাগে অভিযানে নামি। মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় ডেলিভারি দেয়। তখন প্রথমে ডেলিভারিম্যানকে পরে মূলহোতাকে গ্রেফতার করা হয়।