হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আজই আদালতে পাঠানো হবে বিচারপতি খায়রুল হককে

- আপডেট: ০৬:১৯:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
- / ৮
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে আটক সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে আজই (বৃহস্পতিবার) আদালতে পাঠানো হবে। যাত্রাবাড়ী থানায় থাকা একটি হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকালে ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এবিএম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে চারটি মামলার তথ্য পাওয়া যাওয়া গেছে। এরমধ্যে একটি শাহবাগ ও অপরটি যাত্রবাড়ী থানায় হয়েছে। ঊধ্বর্তনদের নির্দেশনা এলে আজ সন্ধ্যার পর তাকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।’
এর আগে সকাল আটটার দিকে ধানমন্ডি এলাকা থেকে আটক করা হয় সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে। এরপর তাকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। আওয়ামী লীগ আমলের বিভিন্ন জাল-জালিয়াতির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন তিনি।
দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে এবিএম খায়রুল হক শপথ নেন ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। পরের বছর (২০১১ সাল) ১৭ মে ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
এদিকে সম্প্রতি সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। ‘দেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ উল্লেখ করে তাকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানায় সংগঠনটি।
বিচারাঙ্গনে তুমুলভাবে আলোচিত-সমালোচিত এ বিচারপতির বেশ কয়েকটি রায় চরম বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। তিনি নিজে আওয়ামী আমলে নানাভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছিল কয়েকজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে ডিঙিয়ে।
প্রধান বিচারপতি থাকাকালে ত্রাণ তহবিলের টাকায় নিজের চিকিৎসা করে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। অবসর নেওয়ার কয়েকদিন আগে তিনি ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন। এতে দেশে রাজনৈতিক সংঘাতের পথ উন্মুক্ত হয়। পাশাপাশি শেখ হাসিনার ভোট ডাকাতির চূড়ান্ত সুযোগ তৈরি হয়।
রাজনৈতিক একটি বিষয়কে আদালতের আওতাধীন করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন বলে রায় দিয়েছিলেন এবিএম খায়রুল হক। এছাড়া বিতর্কিত একাধিক বিচারপতিকে শপথ পড়ানো, আগাম জামিনের এখতিয়ার কেড়ে নেওয়া, খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
খায়রুল হকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা আছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গত ১৮ আগস্ট ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য ইমরুল হাসান বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় খায়রুল হকের বিরুদ্ধে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পরিবর্তন ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে খায়রুল হক ছিলেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না।