র্যাবের অভিযানে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ গ্রেফতার ২

- আপডেট: ০৪:৫৯:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
- / ১৮০১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
রাজধানীর কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২ টি বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০)।
বৃহস্পতিবার (২৮আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে এসব জানান র্যাব মহাপরিচালক,অতিঃআইজিপি একেএম শহিদুর রহমান।
শহিদুর রহমান বলেন, গতকাল (২৭ আগস্ট) বিকাল অনুমান ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি রাজধানীর কদমতলী থানাধীন রহমতবাগ এলাকার একটি ভাড়া বাসায় কয়েকজন ব্যক্তি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ অবস্থান করছে।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১০ দ্রুত ওই এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে। সুনির্দিষ্ট অভিযান পরিচালনার লক্ষ্যে রাজধানীর কদমতলী থানাধীন রহমতবাগ এলাকার একটি ৮ তলা ভবন ঘিরে ফেলা হয়। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ঐ ভবনের ৫ম তলায় বসবাসরত মো. বাচ্চু মিয়ার ভাড়াকৃত ফ্ল্যাটে অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী মো.শুকুর হোসেন ওরফে শ্যুটার শুক্কুর (৪২) অবস্থান করছে।
তিনি বলেন, শ্যুটার শুক্কুর প্রায়ই মো. বাচ্চু মিয়ার ভাড়াকৃত ফ্ল্যাটে যাতায়াত করত এবং সেখানে অবস্থান করতো। যা গোয়েন্দা নজরদারিতে নিশ্চিত হওয়া যায়। এক পর্যায়ে মো. বাচ্চু মিয়া (৩৮) ফ্ল্যাট থেকে বের হলে তাকে ভবনের সামনেই আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ৯৬ পিস ইয়াবা ও ৫ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তার ভাড়াকৃত ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো হলেও, সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মো. শুকুর হোসেন ওরফে শ্যুটার শুক্কুর আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে ৮ তলা ভবনের ছাদ থেকে পার্শ্ববর্তী ৬ তলা ভবনের ছাদে লাফ দেয়। ছাদে অবস্থানরত র্যাব সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঘিরে ফেলে এবং তল্লাশির সময় তার হাতে থাকা শপিং ব্যাগের ভিতর হতে লোড করা অবস্থায় ২টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন ও ১২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে এবং র্যাব হেফাজতে নেয়া হয়।
প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলোর মধ্যে একটি পিস্তল পুলিশের হারিয়ে যাওয়া অস্ত্র। যা তারা অবৈধভাবে সংগ্রহ করে নিজেদের হেফাজতে রেখেছিল। অস্ত্রটি শনাক্ত এড়াতে তারা এর সিরিয়াল নম্বর ঘষে ফেলা ও বাট পরিবর্তনের মতো চাতুরীপূর্ণ কাজ করে, যাতে এটি পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র বলে চিহ্নিত না হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামিরা শুধু মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গেই জড়িত নয়, তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সক্রিয় সদস্য। যারা দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, জমি দখল ও অস্ত্র ব্যবসার মতো অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত এবং অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করত।
গ্রেফতারকৃত আসামি মো.শুকুর হোসেন ওরফে শ্যুটার শুক্কুরের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও মাদক সংক্রান্ত মোট ৪টি মামলা রয়েছে এবং আগেও ৪ বার গ্রেফতার হয়েছিল। অপরদিকে, আরেক গ্রেফতারকৃত আসামি মো.বাচ্চু মিয়া (৩৮)-এর বিরুদ্ধেও মাদক সংক্রান্ত ২টি মামলা রয়েছে।
এসময় ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্রের উৎস ও ব্যবহারকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে র্যাবের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানানো হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।