লেনদেন বড় অংকের অর্থ:’রাজনৈতিক ও আধিপত্য বিস্তার’ কেন্দ্র করে পল্লবীর কিবরিয়াকে হত্যা
- আপডেট: ০৫:১৭:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
- / ১৮০০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
রাজধানীর পল্লবী থানার যুবদলের সদস্য সচিব গোলাম কিবরিয়া (৫০) হত্যা মামলায় দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৪)। গ্রেফতাররা হলেন- হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মো.মনির হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা সোহেল (৩০) ও মো.সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজন (৩৫)।
র্যাব বলছে,পল্লবীর রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডটি সুপরিকল্পিত এবং বড় অংকের অর্থের লেনদেন হয়েছে। গ্রেফতার দুজন মিরপুর কেন্দ্রিক গড়ে ওঠা ‘ফোর স্টার গ্রুপের’ সক্রিয় সদস্য।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো.মাহবুব আলম।
তিনি বলেন,গত ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় পল্লবী থানাধীন বিক্রমপুর সেনিটারী ও হার্ডওয়্যার দোকানে ছয়জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে পিস্তল দিয়ে বুকে ও পিঠে অতর্কিত গুলি করে পল্লবী থানা যুবদলের সদস্য সচিব গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করে। স্থান হতে পলায়নের সময় স্থানীয় জনতার ওপর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে এবং এতে একজন রিকশাচালক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হয়। পরবর্তীতে ছাত্র জনতা তাদেরকে ধাওয়া করে জনি ভূইয়া নামক একজন সন্ত্রাসীকে আটক করে পল্লবী থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করে।
ঘটনার পরপরই র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং আনুষঙ্গিক তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮ নভেম্বর রাতে সাভার থানাধীন বিরোলিয়া এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মো.মনির হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা সোহেল এবং টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন মাজার বস্তি এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের সন্দিন্ধ ও ১৮টি মামলার শীর্ষ ও পলাতক সন্ত্রাসী মো.সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান,রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড যাতে বড় অংকের অর্থের লেনদেন হয়। আসামিরা পেশাদার হত্যাকারী এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পাতা সোহেলের নামে একাধিক হত্যা,ডাকাতি,মাদকসহ পল্লবী থানায় মোট ৮টি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতার দুজন মিরপুর কেন্দ্রিক গড়ে উঠা ফোর স্টার গ্রুপের সক্রিয় সদস্য।
ফোর স্টার গ্রুপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ইব্রাহিম ও মামুন নিয়ন্ত্রিত যেসব এলাকা রয়েছে সেসব এলাকায় এই ফোর স্টার গ্রুপের সদস্যরা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে লে.কর্নেল মাহবুব আলম বলেন,সোহেল ওরফে পাতা সোহেল অর্থ সরবরাহ করেছিলেন। তবে তিনি কীভাবে অর্থ পেয়েছেন কিংবা কার কাছ থেকে পেয়েছেন সেটা এখনও পরিস্কার না।
হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে প্রশ্নে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন,মিরপুর এলাকা কেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তার চাঁদাবাজি-মাদক ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং দ্বিতীয়টি হলো রাজনৈতিক কোন্দল। নিহত গোলাম কিবরিয়া একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য সচিব এবং মিরপুর এলাকায় রাজনৈতিকভাবে তিনি খুব সক্রিয় ছিলেন। এর আগে গোলাম কিবরিয়ার যাদের সঙ্গে সখ্যতা ছিল রাজনৈতিক মেরুকরণের পরে সেই সখ্যতার বিরুদ্ধে তিনি কাজ করছিলেন। বিশেষ করে এলাকায় চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারিতে নিহত গোলাম কিবরিয়ার সাপোর্ট ছিল না। হয়তো এ কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামুনের সম্পৃক্ততা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,মামুনের সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা অনুসন্ধান চলছে। হত্যাকাণ্ডে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কানেকশন থাকতে পারে তবে সবাইকে গ্রেফতার করলে রহস্য উন্মোচিত হবে।




















