০১:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

৫ আগস্টের পর কঠোর অবস্থানেই সম্ভব হয়েছেমহাসড়কের জমি উদ্ধার: এসপি রেজাউল

সোনালী খবর
সোনালী খবর
  • আপডেট: ১২:০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
  • / ১০

নিজস্ব প্রতিবেদক;

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অলিপুর (১৪৪ কিমি) ও শায়েস্তাগঞ্জ নতুনব্রিজ গোলচত্বর (১৫৫ কিমি) এলাকায় হাইওয়ে মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের মালিকানাধীন জমি দখল করে গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পল্লব হোম দাসের নেতৃত্বে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেনের তত্ত্বাবধানে এবং হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিমের দূরদর্শী ও চৌকশ পরিকল্পনায় এ উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শতাধিক অবৈধ টং দোকান, চায়ের স্টল, কাঠের ছাউনি ও স্থায়ী কাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়। অভিযানে অংশ নেন শিল্প পুলিশের এডিশনাল এসপি ফয়ছল আহমেদ, শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা এবং শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি দিলীপ কান্ত নাথ। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ও সেনা সদস্য অভিযানে সহায়তা করেন।

ইউএনও পল্লব হোম দাস বলেন, “মহাসড়কের সরকারি জায়গা দখল করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছিল। এতে যানজট তৈরি হচ্ছিল, দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছিল। সরকারি জমি পুনরুদ্ধারে নিয়মিত অভিযান চলবে। সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, অভিযানে প্রায় দুই একর জমি উদ্ধার হয়েছে। তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে যেন কেউ পুনরায় দখল করতে না পারে, সেজন্য নিয়মিত নজরদারি করা হবে।

হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রতিবন্ধকতায় মহাসড়কের জায়গা উদ্ধার সম্ভব হচ্ছিল না। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আমরা কঠোর অবস্থান নিয়ে সকল প্রশাসনের সক্রিয় সহায়তায় এবার সফলভাবে দখলদারদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “আজ উদ্বোধন হওয়া পুলিশ বক্স কেবল একটি স্থাপনা নয়, এটি আইনের শাসনের প্রতীক। মহাসড়কের জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে এবং আজ থেকে ওলিপুর শিল্প এলাকায় ২৪ ঘণ্টা হাইওয়ে পুলিশ ও শিল্প পুলিশের টহল কার্যক্রম চালু থাকবে। অভিযান চলাকালে কিছু দোকানদার মৌখিক আপত্তি জানালেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

উচ্ছেদ হওয়া দোকানি কুদ্দুছ মিয়া বলেন, “আমার দোকানেই সংসার চলতো। কোনো নোটিশ ছাড়া হঠাৎ এসে ভেঙে দিল। আমি এখন কোথায় যাবো?” তবে প্রশাসনের দাবি, দুদিন আগেই মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ এ অভিযানকে স্বাগত জানালেও পুনরায় দখলের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

রতন মিয়া নামের এক বাসিন্দা বলেন, “উচ্ছেদ তো হয়, কিন্তু কয়েকদিন পর আবার জায়গাগুলো দখলে চলে যায়। এবার যেন সেটা না হয়, প্রশাসনের উচিত কঠোর নজরদারি চালানো। হাইওয়ে থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, “এ অবৈধ স্থাপনাগুলো যানবাহন চলাচলে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমাদের এসপি স্যারের পরিকল্পনায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

ভবিষ্যতে আর কাউকে মহাসড়কের পাশে অবৈধভাবে স্থাপনা গড়তে দেওয়া হবে না। অভিযান শেষে বিকেলে উদ্ধারকৃত জমিতে অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহফিল ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হয় হাইওয়ে পুলিশ এবং শিল্প পুলিশ বক্সের নির্মাণ কার্যক্রম। উক্ত কার্যক্রমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

৫ আগস্টের পর কঠোর অবস্থানেই সম্ভব হয়েছেমহাসড়কের জমি উদ্ধার: এসপি রেজাউল

আপডেট: ১২:০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক;

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অলিপুর (১৪৪ কিমি) ও শায়েস্তাগঞ্জ নতুনব্রিজ গোলচত্বর (১৫৫ কিমি) এলাকায় হাইওয়ে মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের মালিকানাধীন জমি দখল করে গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পল্লব হোম দাসের নেতৃত্বে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেনের তত্ত্বাবধানে এবং হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিমের দূরদর্শী ও চৌকশ পরিকল্পনায় এ উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শতাধিক অবৈধ টং দোকান, চায়ের স্টল, কাঠের ছাউনি ও স্থায়ী কাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়। অভিযানে অংশ নেন শিল্প পুলিশের এডিশনাল এসপি ফয়ছল আহমেদ, শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা এবং শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি দিলীপ কান্ত নাথ। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ও সেনা সদস্য অভিযানে সহায়তা করেন।

ইউএনও পল্লব হোম দাস বলেন, “মহাসড়কের সরকারি জায়গা দখল করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছিল। এতে যানজট তৈরি হচ্ছিল, দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছিল। সরকারি জমি পুনরুদ্ধারে নিয়মিত অভিযান চলবে। সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, অভিযানে প্রায় দুই একর জমি উদ্ধার হয়েছে। তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে যেন কেউ পুনরায় দখল করতে না পারে, সেজন্য নিয়মিত নজরদারি করা হবে।

হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রতিবন্ধকতায় মহাসড়কের জায়গা উদ্ধার সম্ভব হচ্ছিল না। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আমরা কঠোর অবস্থান নিয়ে সকল প্রশাসনের সক্রিয় সহায়তায় এবার সফলভাবে দখলদারদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “আজ উদ্বোধন হওয়া পুলিশ বক্স কেবল একটি স্থাপনা নয়, এটি আইনের শাসনের প্রতীক। মহাসড়কের জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে এবং আজ থেকে ওলিপুর শিল্প এলাকায় ২৪ ঘণ্টা হাইওয়ে পুলিশ ও শিল্প পুলিশের টহল কার্যক্রম চালু থাকবে। অভিযান চলাকালে কিছু দোকানদার মৌখিক আপত্তি জানালেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

উচ্ছেদ হওয়া দোকানি কুদ্দুছ মিয়া বলেন, “আমার দোকানেই সংসার চলতো। কোনো নোটিশ ছাড়া হঠাৎ এসে ভেঙে দিল। আমি এখন কোথায় যাবো?” তবে প্রশাসনের দাবি, দুদিন আগেই মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ এ অভিযানকে স্বাগত জানালেও পুনরায় দখলের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

রতন মিয়া নামের এক বাসিন্দা বলেন, “উচ্ছেদ তো হয়, কিন্তু কয়েকদিন পর আবার জায়গাগুলো দখলে চলে যায়। এবার যেন সেটা না হয়, প্রশাসনের উচিত কঠোর নজরদারি চালানো। হাইওয়ে থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, “এ অবৈধ স্থাপনাগুলো যানবাহন চলাচলে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমাদের এসপি স্যারের পরিকল্পনায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

ভবিষ্যতে আর কাউকে মহাসড়কের পাশে অবৈধভাবে স্থাপনা গড়তে দেওয়া হবে না। অভিযান শেষে বিকেলে উদ্ধারকৃত জমিতে অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহফিল ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হয় হাইওয়ে পুলিশ এবং শিল্প পুলিশ বক্সের নির্মাণ কার্যক্রম। উক্ত কার্যক্রমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।