পুরুষ শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি: ঢাবির রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিম আটক
- আপডেট: ০২:৪৫:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
- / ১৮০০৪
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
দীর্ঘদিন ধরে পুরুষ শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড.এরশাদ হালিমকে আটক করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ রোমান।
পুলিশ জানায়,বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে রাজধানীর শেওরাপাড়ায় নিজ বাসায় থেকে অধ্যাপক এরশাদ হালিমকে আটক করা হয়। আটককৃত অধ্যাপককে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
ওসি বলেন,শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির বেশ কয়েকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের স্বার্থে তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ আরও জানায়,অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাই এবং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাবির প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন,ড.এরশাদ হালিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। যেহেতু তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন না,তাই এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছে।
এর আগে রসায়ন বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলন করে ড. এরশাদ হালিমের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন। এছাড়া,রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী এ কে এম সুমন ফেসবুকে একটি পোস্টে ড.এরশাদ হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে পরিচয় গোপন রেখে দুইজন অভিযুক্তের বক্তব্য প্রকাশ করেন।
অভিযোগ রয়েছে—সেখানে তিনি রুমের আলো নিভিয়ে দরজা-জানালা বন্ধ করে বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছে শারীরিক স্পর্শ দাবি করতেন,জোরপূর্বক শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন এবং অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করতেন।
একজন শিক্ষার্থী জানান,তাকে পরীক্ষার সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বাসায় ডেকে শারীরিকভাবে আক্রমণাত্মক আচরণ করা হয়। এমনকি ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে। ঘটনার পর শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কথাও জানান ওই ছাত্র।
আরেক শিক্ষার্থী জানান,পরীক্ষাসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অধ্যাপক তাকে একাধিকবার বাসায় ডেকে নেন এবং ঘরে একা পেয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত শারীরিক স্পর্শ করেন। তিনি বাধা দিলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হন বলে অভিযোগ করেন। এ ঘটনার পর তিনি স্বাভাবিকভাবে ক্লাসে অংশ নিতে পারছেন না।
একাধিক ভুক্তভোগীর বক্তব্য সামনে আসার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে,অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে তদন্ত চলছে।




















