০৮:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫

ট্রান্সপোর্ট থেকে স্টিল — সর্বত্র দখল আর লুট, দাবি ব্যবসায়ী এরশাদ আলীর

  • আপডেট: ০৩:৫৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৮০০৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের ট্রান্সপোর্ট ও স্টিল খাতের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান এরশাদ গ্রুপ-এর চেয়ারম্যান এরশাদ আলী অভিযোগ করেছেন,বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার করে একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়। এর মাধ্যমে তার গড়ে তোলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো লুটপাট ও দখল করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর মগবাজারের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

এরশাদ আলীর দাবি,সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার ছেলে শাফি মোদাচ্ছের খান জ্যোতি,সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও রাজশাহীর মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন একযোগে তার ব্যবসা-বাণিজ্য দখল ও ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেন। এ কাজে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কিছু কর্মকর্তাও যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন,‘আমাকে বিএনপির অর্থদাতা হিসেবে চিহ্নিত করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ৪২টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। একের পর এক গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের মাধ্যমে আমার ব্যবসা ধ্বংস করা হয়েছে। কলাবাগানের নাসির ট্রেড সেন্টারে এরশাদ গ্রুপের প্রধান কার্যালয়, ধানমন্ডির বাসভবন,তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের গুদাম ও স্টিল মিলসহ সবকিছু তারা দখল করে নেয়। আমার ১৩৭টি ট্রাক পর্যন্ত লুট করে নেওয়া হয়েছে।’

এরশাদ আলী আরও জানান,সোনারগাঁয়ের জংদা রি-রোলিং মিলস ও ডেমরার স্টিল মিল শামীম ওসমানের সহযোগী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী আজিজুর রহমান আজিজ দখল করে নেয়। ‘আজিজের নেতৃত্বে দুই কারখানা থেকে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকার মেশিন ও মালামাল লুট করা হয়েছে। সে এখনো এলাকায় ক্যাডার বাহিনী চালায়,’— বলেন তিনি।

সম্প্রতি দর্শনা সীমান্ত থেকে পালানোর সময় আটক হওয়া আজিজুর রহমান আজিজের বিরুদ্ধে হত্যা,গুম ও চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এরশাদ আলী বলেন,‘আমরা আদালতের কাছে দাবি করছি, এই সন্ত্রাসীকে যেন জামিন না দেওয়া হয়। তাকে গ্রেপ্তার রেখে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন।’

নিজের হয়রানির বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন,‘সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে আমাকে বারবার মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হতো। ২০১৭ সালে তিনবার আমাকে তুলে নিয়ে প্রতিবার ৫০ লাখ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। টাকা না দিলে হয়তো আজ বেঁচে থাকতাম না।’

তিনি আরও বলেন,‘আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই। আমার ব্যবসা লুটে নেওয়া এবং দখলে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। আমি আবার ঘুরে দাঁড়াতে চাই, যাতে দেশের তরুণদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন। তিনি বলেন,‘এরশাদ আলী বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হয়েছেন। তার করা মামলা এখনো বিচারাধীন। এখন অন্তত আদালতের মাধ্যমে যেন তিনি ন্যায়বিচার পান,সেই প্রত্যাশা করছি।’

দীর্ঘ কারাবাস ও নির্যাতনের কারণে শারীরিকভাবে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও জানান এরশাদ আলী। ‘আমার ৮০ শতাংশ কিডনি নষ্ট,ডায়াবেটিস ও লিভার সিরোসিসে ভুগছি। তবুও আল্লাহ যতদিন হায়াত দিয়েছেন,ততদিন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাবো,’— বলেন এই ব্যবসায়ী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

ট্রান্সপোর্ট থেকে স্টিল — সর্বত্র দখল আর লুট, দাবি ব্যবসায়ী এরশাদ আলীর

আপডেট: ০৩:৫৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের ট্রান্সপোর্ট ও স্টিল খাতের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান এরশাদ গ্রুপ-এর চেয়ারম্যান এরশাদ আলী অভিযোগ করেছেন,বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার করে একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়। এর মাধ্যমে তার গড়ে তোলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো লুটপাট ও দখল করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর মগবাজারের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

এরশাদ আলীর দাবি,সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার ছেলে শাফি মোদাচ্ছের খান জ্যোতি,সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও রাজশাহীর মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন একযোগে তার ব্যবসা-বাণিজ্য দখল ও ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেন। এ কাজে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কিছু কর্মকর্তাও যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন,‘আমাকে বিএনপির অর্থদাতা হিসেবে চিহ্নিত করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ৪২টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। একের পর এক গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের মাধ্যমে আমার ব্যবসা ধ্বংস করা হয়েছে। কলাবাগানের নাসির ট্রেড সেন্টারে এরশাদ গ্রুপের প্রধান কার্যালয়, ধানমন্ডির বাসভবন,তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের গুদাম ও স্টিল মিলসহ সবকিছু তারা দখল করে নেয়। আমার ১৩৭টি ট্রাক পর্যন্ত লুট করে নেওয়া হয়েছে।’

এরশাদ আলী আরও জানান,সোনারগাঁয়ের জংদা রি-রোলিং মিলস ও ডেমরার স্টিল মিল শামীম ওসমানের সহযোগী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী আজিজুর রহমান আজিজ দখল করে নেয়। ‘আজিজের নেতৃত্বে দুই কারখানা থেকে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকার মেশিন ও মালামাল লুট করা হয়েছে। সে এখনো এলাকায় ক্যাডার বাহিনী চালায়,’— বলেন তিনি।

সম্প্রতি দর্শনা সীমান্ত থেকে পালানোর সময় আটক হওয়া আজিজুর রহমান আজিজের বিরুদ্ধে হত্যা,গুম ও চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এরশাদ আলী বলেন,‘আমরা আদালতের কাছে দাবি করছি, এই সন্ত্রাসীকে যেন জামিন না দেওয়া হয়। তাকে গ্রেপ্তার রেখে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন।’

নিজের হয়রানির বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন,‘সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে আমাকে বারবার মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হতো। ২০১৭ সালে তিনবার আমাকে তুলে নিয়ে প্রতিবার ৫০ লাখ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। টাকা না দিলে হয়তো আজ বেঁচে থাকতাম না।’

তিনি আরও বলেন,‘আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই। আমার ব্যবসা লুটে নেওয়া এবং দখলে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। আমি আবার ঘুরে দাঁড়াতে চাই, যাতে দেশের তরুণদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন। তিনি বলেন,‘এরশাদ আলী বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হয়েছেন। তার করা মামলা এখনো বিচারাধীন। এখন অন্তত আদালতের মাধ্যমে যেন তিনি ন্যায়বিচার পান,সেই প্রত্যাশা করছি।’

দীর্ঘ কারাবাস ও নির্যাতনের কারণে শারীরিকভাবে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও জানান এরশাদ আলী। ‘আমার ৮০ শতাংশ কিডনি নষ্ট,ডায়াবেটিস ও লিভার সিরোসিসে ভুগছি। তবুও আল্লাহ যতদিন হায়াত দিয়েছেন,ততদিন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাবো,’— বলেন এই ব্যবসায়ী।