মাদকনির্ভরশীলদের মাদকমুক্ত রাখতে অভিভাবকদের গুরুত্ব অপরিসীম
- আপডেট: ০৪:৫৯:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ১৮০০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
মাদকনির্ভরশীলদের মাদকমুক্ত করে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনতে অভিভাবকদের যথাযথ সন্তান লালন-পালন কৌশল বা অভিভাবকত্ব দক্ষতা অর্জন করা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সভাকক্ষে আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের আয়োজনে পারিবারিক সভায় একথা বলেন অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্লিনিক্যাল স্পিস এবং ল্যাংগুয়েজ থেরাপিস্ট সৈয়দা মিননাতা পারভিন। এসময় তিনি বলেন, মাদকাসক্তির চিকিৎসায় কেবল ওষুধ বা থেরাপিই যথেষ্ট নয়, বরং রোগীর জন্য ঘরে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা অপরিহার্য। যদি অভিভাবকরা দক্ষ ও সচেতন হন, তবে তারা রোগীর মানসিক অস্থিরতা বুঝতে পারেন এবং বিজ্ঞানসম্মত আচরণের মাধ্যমে তাকে পুনরায় আসক্তি থেকে রক্ষা করতে পারেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাদকাসক্তি প্রতিরোধ ও প্রতিকারে অভিভাবকদের এই দক্ষতাকে এখন চিকিৎসার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
মাদকাসক্তি চিকিৎসা পুনর্বাসন কেন্দ্রের কাইন্সেলর সুমাইয়া তিথির সঞ্চালনায় সভায় আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেক্টরের সিনিয়র সাইকোলোজিস্ট রাখী গাঙ্গুলী, কেন্দ্র ব্যবস্থাপক লায়লা ইয়াসমিন ও কেস ম্যানেজার রোজিনা খাতুন।
সভায় আলোচকরা তাদের আলোচনায় বলেন-মাদকাসক্তিকে অনেক সময় ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের সাথে তুলনা করা হয়; কারণ এই রোগের রোগীদের যেমন সারাজীবন নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ ও জীবনশৈলী মেনে চলতে হয়, তেমনি মাদকনির্ভরশীলদের ক্ষেত্রেও চিকিৎসার পর নির্দিষ্ট ব্যবস্থাপনা মেনে চলা জরুরি। এই ব্যবস্থাপনার সামান্য ব্যত্যয় ঘটলেই পুনরায় মাদক গ্রহণের ঝুঁকি তৈরি হয়। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় এবং দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতা বজায় রাখতে চিকিৎসকের পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে অভিভাবকদের কার্যকর ‘পেরেন্টিং স্কিল’ বা সন্তান লালন-পালনের সঠিক কৌশল। তারা আরো বলেন, মাদকনির্ভরশীলতাকে একটি জটিল এবং পুনরায় আসক্তিমূলক মস্তিষ্কের রোগ। এটি এমন এক দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা যা বারবার ফিরে আসার প্রবণতা রাখে। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি চিকিৎসা গ্রহণের পরও সঠিক পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনার অভাবে একাধিকবার মাদক গ্রহণ করতে পারেন। তবে সঠিক পরিচর্যা ও নিয়মিত নির্দেশনার মধ্য দিয়ে একজন মাদকনির্ভরশীল ব্যক্তি পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।
এসময় কেন্দ্রে চিকিৎসারত ক্লায়েন্টের অভিভাবকগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ব্যক্তি,পরিবার ও দেশকে মাদকমুক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র মাদকনির্ভরশীল ব্যক্তিদের চিকিৎসা প্রদান করে থাকে।




















