১১:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

র‍্যাব-বিটিআরসির যৌথ অভিযান: ফার্মগেট-মালিবাগে অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছিল ওয়াকিটকি সেট-যন্ত্রাংশ

  • আপডেট: ০৭:৪১:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১৮০০৪

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

রাজধানীর ফার্মগেট ও মালিবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ওয়াকিটকি সেট ও যন্ত্রাংশ উদ্ধার এবং আমদানিকারকসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন,বোয়াফাং হ্যান্ডি (BOAFANG HANDY) নামে অনলাইন পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে অনলাইনে বিক্রয়কারী আনিকুল ইসলাম নাঈম (৩৫) ও তার সহযোগী সাব্বির আহমেদ (২৫)।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর ফার্মগেট ও মালিবাগ এলাকায় র‍্যাব-৩ ও বিটিআরসি যৌথ অভিযানে পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।

এসময় তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়– ওয়াকিটকি সেট ৫৮টি, ওয়াকিটকি সেটের ব্যাটারি ২৯০টি, চার্জার ৫৯৫টি, ওয়াকিটকি সেটের ক্লিপ ২৫০টি ও ফিতা ২৫০টি।

র‍্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সনদ বড়ুয়া জানান, র‍্যাব-৩ গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় অবৈধভাবে কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট দীর্ঘদিন যাবত বিক্রি করে আসছে। কিন্তু বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের অপরাধ দমনে র‍্যাব নিয়মিত গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে রাজধানীর ফার্মগেট ও মালিবাগ এলাকায় র‍্যাব-৩ ও বিটিআরসি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে এএসপি সনদ বড়ুয়া বলেন, বোয়াফাং হ্যান্ডি নামে অনলাইন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে বেতার যন্ত্র ওয়াকিটকি সেট নিজেদের হেফাজতে রেখে বিক্রি করে আসছিল। কিন্তু তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা এসব ওয়াকিটকি এবং যন্ত্রাংশ নিয়ে গ্রেফতার আসামিরা লাইসেন্স ও কারিগরি গ্রহণযোগ্যতা সংক্রান্ত সনদ বা কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।

এসব ওয়াকিটকি সেট অবৈধভাবে ৮০০ থেকে ১,০০০ টাকায় আমদানি করে দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে। ব্যাটারির চার্জ ধারণের ক্ষমতা অনুযায়ী ওয়াকিটকির দামের তারতম্য হয়ে থাকে।

গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানায়,এসব ওয়াকিটকি ডোর টু ডোর অনলাইন সার্ভিসের মাধ্যমে চায়না থেকে ক্রয় করা হয়। দেশের সাধারণ জনগণ ওয়াকিটকি বহনকারী একজন ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে অপরাধীরা ভুয়া ডিবি, র‍্যাব সদস্য, ডিজিএফআই সদস্য, এনএসআই সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ডাকাতি, রোড ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়সহ মারাত্মক অপরাধ সংগঠিত করে আসছে।

এএসপি সনদ বড়ুয়া বলেন,এতে করে একদিকে যেমন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, অন্যদিকে প্রকৃত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যখন সাদা পোশাকে দায়িত্বপালনের প্রয়োজন হয় তখন জনসাধারণ তাদের ভুয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ভেবে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ওয়াকিটকির মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করে অপরাধ সংগঠন করলে পরে অপরাধী শনাক্তকরণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবে। যা সার্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

গ্রেফতারকৃত আনিকুল ইসলাম নাঈম অনলাইন প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি দীর্ঘ দুই বছর যাবত অবৈধভাবে ওয়াকিটকি সামগ্রী নিজ হেফাজতে মজুত রেখে বিক্রি করে আসছিলেন। গ্রেফতারকৃত সাব্বির আহমেদ (২৫) তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন।

ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার সংক্রান্ত লাইসেন্স ও কারিগরি গ্রহণযোগ্যতা সংক্রান্ত সনদ ব্যতীত পরস্পর যোগসাজশে ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১ (সংশোধনী/২০১০) এর ৫৫(৭)/৫৭(৩)/৭৪ ধারার অপরাধ করায় রাজধানীর শাহজাহানপুর থানা ও শেরেবাংলা নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।

দায়ের করা মামলায় আনিকুল ইসলাম নাঈমকে শাহজাহানপুর থানায় ও আসামি সাব্বির আহমেদকে শেরেবাংলা নগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

র‍্যাব-বিটিআরসির যৌথ অভিযান: ফার্মগেট-মালিবাগে অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছিল ওয়াকিটকি সেট-যন্ত্রাংশ

আপডেট: ০৭:৪১:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

রাজধানীর ফার্মগেট ও মালিবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ওয়াকিটকি সেট ও যন্ত্রাংশ উদ্ধার এবং আমদানিকারকসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন,বোয়াফাং হ্যান্ডি (BOAFANG HANDY) নামে অনলাইন পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে অনলাইনে বিক্রয়কারী আনিকুল ইসলাম নাঈম (৩৫) ও তার সহযোগী সাব্বির আহমেদ (২৫)।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর ফার্মগেট ও মালিবাগ এলাকায় র‍্যাব-৩ ও বিটিআরসি যৌথ অভিযানে পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।

এসময় তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়– ওয়াকিটকি সেট ৫৮টি, ওয়াকিটকি সেটের ব্যাটারি ২৯০টি, চার্জার ৫৯৫টি, ওয়াকিটকি সেটের ক্লিপ ২৫০টি ও ফিতা ২৫০টি।

র‍্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সনদ বড়ুয়া জানান, র‍্যাব-৩ গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় অবৈধভাবে কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট দীর্ঘদিন যাবত বিক্রি করে আসছে। কিন্তু বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের অপরাধ দমনে র‍্যাব নিয়মিত গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে রাজধানীর ফার্মগেট ও মালিবাগ এলাকায় র‍্যাব-৩ ও বিটিআরসি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে এএসপি সনদ বড়ুয়া বলেন, বোয়াফাং হ্যান্ডি নামে অনলাইন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে বেতার যন্ত্র ওয়াকিটকি সেট নিজেদের হেফাজতে রেখে বিক্রি করে আসছিল। কিন্তু তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা এসব ওয়াকিটকি এবং যন্ত্রাংশ নিয়ে গ্রেফতার আসামিরা লাইসেন্স ও কারিগরি গ্রহণযোগ্যতা সংক্রান্ত সনদ বা কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।

এসব ওয়াকিটকি সেট অবৈধভাবে ৮০০ থেকে ১,০০০ টাকায় আমদানি করে দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে। ব্যাটারির চার্জ ধারণের ক্ষমতা অনুযায়ী ওয়াকিটকির দামের তারতম্য হয়ে থাকে।

গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানায়,এসব ওয়াকিটকি ডোর টু ডোর অনলাইন সার্ভিসের মাধ্যমে চায়না থেকে ক্রয় করা হয়। দেশের সাধারণ জনগণ ওয়াকিটকি বহনকারী একজন ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে অপরাধীরা ভুয়া ডিবি, র‍্যাব সদস্য, ডিজিএফআই সদস্য, এনএসআই সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ডাকাতি, রোড ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়সহ মারাত্মক অপরাধ সংগঠিত করে আসছে।

এএসপি সনদ বড়ুয়া বলেন,এতে করে একদিকে যেমন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, অন্যদিকে প্রকৃত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যখন সাদা পোশাকে দায়িত্বপালনের প্রয়োজন হয় তখন জনসাধারণ তাদের ভুয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ভেবে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ওয়াকিটকির মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করে অপরাধ সংগঠন করলে পরে অপরাধী শনাক্তকরণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবে। যা সার্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

গ্রেফতারকৃত আনিকুল ইসলাম নাঈম অনলাইন প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি দীর্ঘ দুই বছর যাবত অবৈধভাবে ওয়াকিটকি সামগ্রী নিজ হেফাজতে মজুত রেখে বিক্রি করে আসছিলেন। গ্রেফতারকৃত সাব্বির আহমেদ (২৫) তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন।

ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার সংক্রান্ত লাইসেন্স ও কারিগরি গ্রহণযোগ্যতা সংক্রান্ত সনদ ব্যতীত পরস্পর যোগসাজশে ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১ (সংশোধনী/২০১০) এর ৫৫(৭)/৫৭(৩)/৭৪ ধারার অপরাধ করায় রাজধানীর শাহজাহানপুর থানা ও শেরেবাংলা নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।

দায়ের করা মামলায় আনিকুল ইসলাম নাঈমকে শাহজাহানপুর থানায় ও আসামি সাব্বির আহমেদকে শেরেবাংলা নগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।