০৫:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

নোয়াখালী বিভাগ দাবির আন্দোলন জনগনের দীর্ঘমেয়াদী আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ: সোহেল বাদশা

  • আপডেট: ০২:৩৮:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৮০৬০

নিজস্ব প্রতিবেদক,সোনালী খবর

নোয়াখালী বিভাগের দাবি কেবল প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়, এটি বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের জনগণের দীর্ঘমেয়াদী আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক টেলিভিশন ও ভোরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক মোহাম্মদ সোহেল বাদশা। তিনি বলেন,নোয়াখালী,ফেনী,লক্ষ্মীপুর,চাঁদপুর ও পাশ্ববর্তী জেলা-উপজেলার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বতন্ত্র প্রশাসনিক বিভাগ চেয়ে আসছে। এই অঞ্চল ঐতিহাসিকভাবে বৃহত্তর নোয়াখালী নামে পরিচিত। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে চট্রগ্রাম ও কুমিল্লার চত্রছায়ায় থাকার কারণে স্থানীয়দের অনেক সিদ্ধান্ত ঢাকার ওপর নির্ভর থাকতে হয়। তাই প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন মানুষের অধিকার ভিত্তিক দীর্ঘমেয়াদী আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ।

স্বতন্ত্র নোয়াখালী গণমাধামে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা তুলে ধরে সোহেল বাদশা বলেন, নোয়াখালী ভৌগোলিকভাবে মধ্য উপকূলীয় অঞ্চলের কেন্দ্র। এটি চট্রগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও ভোলা জেলার সংযোগস্থল। যার কারণে এটি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রশাসনিক হাব হিসেবে পুরো অঞ্চলের উন্নয়নের সমন্বয়কের ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, নোয়াখালীতে নদীভাঙ্গন, উপকূল সংরক্ষণ, মেরিন ড্রাইভ, অবকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি প্রকল্প চলছে। বৃহত্তর নোয়াখালীকে কুমিল্লার সঙ্গে যুক্ত করা যৌক্তিক হবে না। স্বতন্ত্র বিভাগ হিসেবে বাস্তবায়ন করলে বিভাগীয় সদরের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে পারবে। এতে জনমত প্রতিফলিত এবং স্থানীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। এখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, কৃষি ও টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট রয়েছে। নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন হলে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গভেষণা, নীতিনির্ধারণ ও উন্নয়ন কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে পারবে। এতে আঞ্চলিক শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি অফিস স্থাপনের সুযোগ তৈরী হবে।

সোহেল বাদশা বলেন, বৃহত্তর নোয়াখালী অর্থনীতি, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রশাসনিক কাঠামোতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আশপাশের জেলা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক বিভাগ বাস্তবায়ন হলে স্থানীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং জনমতের প্রতিফলন নিশ্চিত হবে। কেননা নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলের নদী ও সমুদ্র সংলগ্ন এলাকা পর্যটন, বাণিজ্য ও স্থানীয় অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। সঠিক পরিকল্পনা ও বিনিয়োগে এটি দেশের বৃহত্তর ভূখন্ডের মতো গুরুত্ব বহন করবে।

নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র ও পেশিশক্তি প্রয়োগের প্রচেষ্টা অভিযোগ তুলে সোহেল বাদশা বলেন, বৃহত্তর নোয়াখালী ও পাশ্ববর্তী জেলা-উপজেলা নিয়ে স্বতন্ত্র নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের আন্দোলন দীর্ঘ তিন যুগের। বিভাগ দাবি করে এই অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন সময় সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন-বিক্ষোভ ও প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আসছেন। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরত্বের জেলা নোয়াখালীকে বাদ দিয়ে ঢাকা থেকে মাত্র এক’শ কিলোমিটার দূরত্বের কুমিল্লাকে বিভাগ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে এবং কুমিল্লার সঙ্গে নোয়াখালীকে যুক্ত করার প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি কোনভাবেই বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের মানুষ মেনে নিবে না বলেই তারা নোয়াখালীকে স্বতন্ত্র বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে নোয়াখালী-ঢাকায় আন্দোলন করছে। এতে কুমিল্লার মানুষ নিশ্চিত পরাজয় জেনে নোয়াখালীর মানুষের ওপর পেশী-শক্তি প্রয়োগের চেষ্টা করছে। আমরা বিশ্বাস করি বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের জনগণের ঐক্য ও চেষ্টাকে কেউ লঘু করে দেখার সুযোগ পাবে না। আমরা দৃঢ়ভাবে প্রতিবাদ জানাতে প্রস্তুত আছি।

সোহেল আরও বলেন, এ ধরনের ষড়যন্ত্র সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন ও উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করবে। এতে এই অঞ্চলের মানুষের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন না হলে গণবিস্ফোরণের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই গণবিস্ফোরণের আগেই অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে এবং স্বতন্ত্র নোয়াখালী বিভাগের দাবিকে সময়মতো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় নোয়াখালী চট্রগ্রাম বিভাগের সঙ্গেই প্রশাসনিক ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সাংঘর্ষিকভাবে কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা করা হলে সেখানে যুক্ত হবে না বৃহত্তর নোয়াখালীবাসী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

নোয়াখালী বিভাগ দাবির আন্দোলন জনগনের দীর্ঘমেয়াদী আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ: সোহেল বাদশা

আপডেট: ০২:৩৮:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,সোনালী খবর

নোয়াখালী বিভাগের দাবি কেবল প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়, এটি বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের জনগণের দীর্ঘমেয়াদী আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক টেলিভিশন ও ভোরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক মোহাম্মদ সোহেল বাদশা। তিনি বলেন,নোয়াখালী,ফেনী,লক্ষ্মীপুর,চাঁদপুর ও পাশ্ববর্তী জেলা-উপজেলার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বতন্ত্র প্রশাসনিক বিভাগ চেয়ে আসছে। এই অঞ্চল ঐতিহাসিকভাবে বৃহত্তর নোয়াখালী নামে পরিচিত। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে চট্রগ্রাম ও কুমিল্লার চত্রছায়ায় থাকার কারণে স্থানীয়দের অনেক সিদ্ধান্ত ঢাকার ওপর নির্ভর থাকতে হয়। তাই প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন মানুষের অধিকার ভিত্তিক দীর্ঘমেয়াদী আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ।

স্বতন্ত্র নোয়াখালী গণমাধামে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা তুলে ধরে সোহেল বাদশা বলেন, নোয়াখালী ভৌগোলিকভাবে মধ্য উপকূলীয় অঞ্চলের কেন্দ্র। এটি চট্রগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও ভোলা জেলার সংযোগস্থল। যার কারণে এটি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রশাসনিক হাব হিসেবে পুরো অঞ্চলের উন্নয়নের সমন্বয়কের ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, নোয়াখালীতে নদীভাঙ্গন, উপকূল সংরক্ষণ, মেরিন ড্রাইভ, অবকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি প্রকল্প চলছে। বৃহত্তর নোয়াখালীকে কুমিল্লার সঙ্গে যুক্ত করা যৌক্তিক হবে না। স্বতন্ত্র বিভাগ হিসেবে বাস্তবায়ন করলে বিভাগীয় সদরের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে পারবে। এতে জনমত প্রতিফলিত এবং স্থানীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। এখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, কৃষি ও টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট রয়েছে। নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন হলে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গভেষণা, নীতিনির্ধারণ ও উন্নয়ন কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে পারবে। এতে আঞ্চলিক শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি অফিস স্থাপনের সুযোগ তৈরী হবে।

সোহেল বাদশা বলেন, বৃহত্তর নোয়াখালী অর্থনীতি, জনসংখ্যা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রশাসনিক কাঠামোতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আশপাশের জেলা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক বিভাগ বাস্তবায়ন হলে স্থানীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং জনমতের প্রতিফলন নিশ্চিত হবে। কেননা নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলের নদী ও সমুদ্র সংলগ্ন এলাকা পর্যটন, বাণিজ্য ও স্থানীয় অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। সঠিক পরিকল্পনা ও বিনিয়োগে এটি দেশের বৃহত্তর ভূখন্ডের মতো গুরুত্ব বহন করবে।

নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র ও পেশিশক্তি প্রয়োগের প্রচেষ্টা অভিযোগ তুলে সোহেল বাদশা বলেন, বৃহত্তর নোয়াখালী ও পাশ্ববর্তী জেলা-উপজেলা নিয়ে স্বতন্ত্র নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের আন্দোলন দীর্ঘ তিন যুগের। বিভাগ দাবি করে এই অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন সময় সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন-বিক্ষোভ ও প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আসছেন। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরত্বের জেলা নোয়াখালীকে বাদ দিয়ে ঢাকা থেকে মাত্র এক’শ কিলোমিটার দূরত্বের কুমিল্লাকে বিভাগ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে এবং কুমিল্লার সঙ্গে নোয়াখালীকে যুক্ত করার প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি কোনভাবেই বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের মানুষ মেনে নিবে না বলেই তারা নোয়াখালীকে স্বতন্ত্র বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে নোয়াখালী-ঢাকায় আন্দোলন করছে। এতে কুমিল্লার মানুষ নিশ্চিত পরাজয় জেনে নোয়াখালীর মানুষের ওপর পেশী-শক্তি প্রয়োগের চেষ্টা করছে। আমরা বিশ্বাস করি বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের জনগণের ঐক্য ও চেষ্টাকে কেউ লঘু করে দেখার সুযোগ পাবে না। আমরা দৃঢ়ভাবে প্রতিবাদ জানাতে প্রস্তুত আছি।

সোহেল আরও বলেন, এ ধরনের ষড়যন্ত্র সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন ও উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করবে। এতে এই অঞ্চলের মানুষের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন না হলে গণবিস্ফোরণের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই গণবিস্ফোরণের আগেই অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে এবং স্বতন্ত্র নোয়াখালী বিভাগের দাবিকে সময়মতো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় নোয়াখালী চট্রগ্রাম বিভাগের সঙ্গেই প্রশাসনিক ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সাংঘর্ষিকভাবে কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা করা হলে সেখানে যুক্ত হবে না বৃহত্তর নোয়াখালীবাসী।