স্বর্ণ, ডলার, পার্সেল পাঠানোর নামে প্রতারণা, গ্রেফতার ১
- আপডেট: ০৯:৪৮:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ১৮০২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্ষতা গড়ে ইউএস থেকে স্বর্ণ, ডলার বা পার্সেল পাঠানোর নামে প্রতারণা চক্রের অন্যতম সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
সিআইডি জানায়, চক্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা ই-মেইল এ মেসেজ দিয়ে নিজেকে পরিচয় দেন বিদেশে অবস্থান করা ইউএস আর্মি, ইউএস নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয়। ধীরে ধীরে ভিকটিমের সাথে গড়ে তোলে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সম্পর্কের এক পর্যায়ে স্বর্ণ, হীরাসহ মূল্যবান পাথর, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার কিংবা ইউরো ইত্যাদি উপহার পাঠানোর কথা বলে ভিক্টিমদের ফাঁদে ফেলে। প্রতারকদের দাবি করা টাকা সরবরাহকৃত নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার শিকার ব্যক্তিকে সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লক করে দেয়া হতো। সাধারণভাবে পরিচিত প্রতারণার এই ধরণ নাইজেরিয়ান ফ্রড ও পারসেল প্রতারক চক্র নামেই সমধিক পরিচিত। এরকম একটি প্রতারক চক্রের অন্যতম সদস্যকে মো. ফারুক হোসেন (৪৭)।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসিম উদ্দীন এ তথ্য জানান। সিআইডি’র ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম এর একটি বিশেষ টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ রাজধানীর পল্টন থানার শান্তিনগর ব্র্যাক ব্যাংক শাখার সামনে থেকে নাইজেরিয়ান ফ্রড ও পারসেল প্রতারক চক্রের অন্যতম এই সদস্যকে গ্রেফতার করে।
জসিম উদ্দীন জানান, নাইজেরিয়ান নাগরিক মারলন স্যামুয়েলসসহ কতিপয় প্রতারক পরস্পর যোগসাজসে কখনও বাংলাদেশে বসে আবার কখনও দেশের বাইরে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে পার্সেলে ডলার অথবা মূল্যবান উপহার পাঠানোর ফাঁদ পেতে প্রতারণাপূর্বক বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। চক্রের দেশি-বিদেশি সদস্যরা বিভিন্ন পন্থায় সাধারণ মানুষের ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল সংগ্রহ করে ইউএস আর্মি, ইউএস নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। সম্পর্কের এক পর্যায়ে স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, হীরা, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার/ইউরো ইত্যাদি উপহার পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে। প্রতারকদের দাবি করা অর্থ তাদেরই সরবরাহকৃত নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হতো। এভাবে ওই নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে অর্থ জমা হওয়ার পরপরই প্রতারণার শিকার ব্যক্তিকে সব ধরণের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লক করে দিতো।
এমনি একটি ঘটনায় একজন ভিকটিমের অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি’র ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম দীর্ঘ অনুসন্ধানে জানতে পারে যে, এরকম মোট ১৬ জন ভিকটিমের নিকট হতে প্রতারক চক্র সর্বমোট ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৩৯৮ টাকা হাতিয়ে নেয় এ প্রতারক চক্রটি। গ্রেফতারকৃত আসামি ফারুক হোসেন- এর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফারুক ট্রেডার্স এর পৃথক ২টি ব্যাংক হিসাব এর প্রথমটিতে ১ কোটি ৪৫ লাখ ১০ হাজার ৬৮৫ টাকা ও দ্বিতীয়টিতে ২১ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৫ টাকা লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে সিআইডির অনুসন্ধানে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা পাওয়ার পর সিআইডি বাদী হয়ে অভিযুক্ত মোমেনা আক্তার রানি (৩৭), মারলন স্যামুয়েলস (নাইজেরিয়ান নাগরিক), মো.কামরুল মোকসেদ প্রকাশ সাজু (৩৫), ইমরান হাসান ইকবাল (৩৩), মো. ফারুক হোসেন (৪৩) এবং মেসার্স ফারুক ট্রেডার্স ও মেসার্স জননী ট্রেডার্সসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জন এর বিরুদ্ধে মতিঝিল (ডিএমপি) থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করে।
মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাপর অভিযুক্তদের সনাক্ত ও গ্রেফতার করার স্বার্থে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।





















