১০:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

গুম প্রতিরোধে শুধু আইন নয়, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও জরুরি: ড. আসিফ নজরুল

  • আপডেট: ০৯:৪৭:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৮০১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন,গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। তিনি বলেন,‘গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার যথেষ্ট নয়, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও প্রয়োজন।’

শনিবার(২৭ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানের হোটেল আমারিতে ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালাটি গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারি আয়োজিত এবং ঢাকার জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়।

ড. আসিফ নজরুল বলেন,‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’

তিনি বিচারকদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন,‘গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।’

কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘রায় লিখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাদের শিল্পকর্মই তাদের রায়।’

কমিশনের সদস্য বিচারপতি ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, ‘গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন ইতোমধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।’

কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান।

ওয়ার্কিং সেশন পরিচালনা করেন কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন। এই পর্বে গুম-সংক্রান্ত মামলায় প্রমাণ সংগ্রহ, সাক্ষ্যগ্রহণ, মানবাধিকার মানদণ্ড প্রয়োগ ও বিচার প্রক্রিয়ার জবাবদিহি নিশ্চিতকরণের বিভিন্ন বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সেশনে সুপারিশ করা হয়, স্থায়ী গুম প্রতিরোধ কমিশন গঠন, গুম প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন, স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা, মনিটরিং সেল গঠন, বিচারকদের প্রশিক্ষণ, ভিক্টিমদের পুনর্বাসন ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ, অনলাইন জিডি সহজীকরণ, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলা নিষ্পত্তি এবং তথ্য বিনিময় কাঠামো উন্নয়ন।

কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন কমিশনের সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস। দেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে কর্মরত প্রায় ৯০ জন বিচারক ও প্রশিক্ষণার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

গুম প্রতিরোধে শুধু আইন নয়, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও জরুরি: ড. আসিফ নজরুল

আপডেট: ০৯:৪৭:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন,গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। তিনি বলেন,‘গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার যথেষ্ট নয়, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও প্রয়োজন।’

শনিবার(২৭ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানের হোটেল আমারিতে ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালাটি গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারি আয়োজিত এবং ঢাকার জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়।

ড. আসিফ নজরুল বলেন,‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’

তিনি বিচারকদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন,‘গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।’

কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘রায় লিখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাদের শিল্পকর্মই তাদের রায়।’

কমিশনের সদস্য বিচারপতি ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, ‘গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন ইতোমধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।’

কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান।

ওয়ার্কিং সেশন পরিচালনা করেন কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন। এই পর্বে গুম-সংক্রান্ত মামলায় প্রমাণ সংগ্রহ, সাক্ষ্যগ্রহণ, মানবাধিকার মানদণ্ড প্রয়োগ ও বিচার প্রক্রিয়ার জবাবদিহি নিশ্চিতকরণের বিভিন্ন বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সেশনে সুপারিশ করা হয়, স্থায়ী গুম প্রতিরোধ কমিশন গঠন, গুম প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন, স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা, মনিটরিং সেল গঠন, বিচারকদের প্রশিক্ষণ, ভিক্টিমদের পুনর্বাসন ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ, অনলাইন জিডি সহজীকরণ, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলা নিষ্পত্তি এবং তথ্য বিনিময় কাঠামো উন্নয়ন।

কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন কমিশনের সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস। দেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে কর্মরত প্রায় ৯০ জন বিচারক ও প্রশিক্ষণার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন।