অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, মূলহোতা গ্রেফতার
- আপডেট: ০৬:৩৫:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
- / ১৮০০২
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে এনজিও গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের মূলহোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনু (৩৭) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
জসীম উদ্দিন বলেন,অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎকারী নাজিম উদ্দিন তনুকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
ওই মামলার বাদীর এজাহারের তথ্য উল্লেখ করে জসীম উদ্দিন বলেন, নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিওতে তিনিসহ আরও অনেক সদস্য সঞ্চয় জমা দান, মাসিক ডিপিএস, এককালীন ঋণ গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেন। ভুক্তভোগীসহ আরও অনেকে আলাদাভাবেও এককালীন আমানত হিসাবে অর্থ জমা করেন। প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ পেতেন গ্রাহকরা।
ওই প্রতিষ্ঠানে বাদীর আমানত হিসেবে মোট ২০ লাখ টাকা ছিল। এছাড়াও ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল মর্মে বাদী তার এজাহারে উল্লেখ করেন। প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায়শই অর্থ উত্তোলন, জমা প্রদানসহ আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন হতো। গ্রেফতার নাজিম উদ্দিন তনু আলোচিত প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ছিলেন।
মামলাটির তদন্তের তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ পেতেন গ্রাহকরা। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এ হারে লভ্যাংশ প্রদান করা হতো। পরে বিষয়টি পরিচালকরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করলে সাধারণ মানুষ ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ এ গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন। বিনিয়োগকারী গ্রাহকদের বেশিরভাগই ছিল দরিদ্র জনগোষ্ঠী। ২০২৪ সালের আগস্ট পরবর্তীসময় থেকে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আর্থিক লেনদেনে অসচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা তাদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
পরে গত বছরের নভেম্বর মাসে পুনরায় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ অফিসে উপস্থিত হয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের কোনো প্রকার অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে অফিস থেকে জোরপূর্বক তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা করেন। এ পর্যন্ত ৮০০’র অধিক ভুক্তভোগী প্রায় ৬০০ কোটির বেশি টাকা প্রতারিত হয়েছেন মর্মে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে।
মামলার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় এখন পর্যন্ত মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।




















