০৮:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

সৌদিতে অপহরণ করে ঢাকায় মুক্তিপণ আদায়, চক্রের সদস্য গ্রেফতার

  • আপডেট: ০৬:৩১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৮০০৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

সৌদি আরবে অপহরণ, এরপর বাংলাদেশে থাকা ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আদায় করা হয় মুক্তিপণ। এমন আন্তর্জাতিক অপহরণ চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতার ব্যক্তির নাম মো. জিয়াউর রহমান (৪২), তার বাড়ি মাগুরার শালিখা উপজেলায়।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য জানান। এর আগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মাগুরার শালিখা উপজেলার হরিপুর বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এ বিষয়ে জসীম উদ্দিন খান বলেন, ভুক্তভোগী রাসেল সৌদি আরবে ২০ বছর ধরে ব্যবসা করেন। গত ১২ জানুয়ারি সকালে রিয়াদ শহর থেকে তাকে অপহরণ করে একটি চক্র। পরে তার বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমো ও ভিওআইপি নম্বর থেকে যোগাযোগ করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

অপহরণকারীরা মুক্তিপণ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশে থাকা বিভিন্ন বিকাশ, নগদ ও ব্যাংক হিসাব নম্বর দেয়। ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা বাধ্য হয়ে ধাপে ধাপে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২৫ লাখ টাকা দেন। সর্বমোট ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দেন তারা।

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, মুক্তিপণ নেওয়ার পর চক্রটি রাসেলকে রিয়াদের এক রাস্তার পাশে অচেতন অবস্থায় ফেলে যায়। যাওয়ার সময় তারা রাসেলের হাতের ছাপ ও অ্যাকামা আইডি নিজেদের কাছে রেখে হুমকি দেয় যে ঘটনা প্রকাশ হলে তার ক্ষতি করা হবে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় নিরাপদে এসে পরিবারকে সবকিছু জানানোর পর তার শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন।

তদন্তে সিআইডি প্রথমে অপহরণকারীদের দেওয়া সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও এমএফএস নম্বর বিশ্লেষণ করে। এসব বিশ্লেষণে উঠে আসে, গ্রেফতার মো. জিয়াউর রহমান এই অর্থ লেনদেন চক্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, সৌদি আরবে থাকা অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগসাজশে মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন পেয়েছেন।

তদন্তে সিআইডি প্রথমে অপহরণকারীদের দেওয়া সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও এমএফএস নম্বর বিশ্লেষণ করে। এসব বিশ্লেষণে উঠে আসে, গ্রেফতার মো. জিয়াউর রহমান এই অর্থ লেনদেন চক্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, সৌদি আরবে থাকা অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগসাজশে মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন পেয়েছেন।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন আরও জানান, এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। এরই মধ্যে গ্রেফতার ২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে। চক্রের বাকি সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের স্বার্থে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত আছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

সৌদিতে অপহরণ করে ঢাকায় মুক্তিপণ আদায়, চক্রের সদস্য গ্রেফতার

আপডেট: ০৬:৩১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

সৌদি আরবে অপহরণ, এরপর বাংলাদেশে থাকা ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আদায় করা হয় মুক্তিপণ। এমন আন্তর্জাতিক অপহরণ চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতার ব্যক্তির নাম মো. জিয়াউর রহমান (৪২), তার বাড়ি মাগুরার শালিখা উপজেলায়।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য জানান। এর আগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মাগুরার শালিখা উপজেলার হরিপুর বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এ বিষয়ে জসীম উদ্দিন খান বলেন, ভুক্তভোগী রাসেল সৌদি আরবে ২০ বছর ধরে ব্যবসা করেন। গত ১২ জানুয়ারি সকালে রিয়াদ শহর থেকে তাকে অপহরণ করে একটি চক্র। পরে তার বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমো ও ভিওআইপি নম্বর থেকে যোগাযোগ করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

অপহরণকারীরা মুক্তিপণ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশে থাকা বিভিন্ন বিকাশ, নগদ ও ব্যাংক হিসাব নম্বর দেয়। ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা বাধ্য হয়ে ধাপে ধাপে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২৫ লাখ টাকা দেন। সর্বমোট ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দেন তারা।

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, মুক্তিপণ নেওয়ার পর চক্রটি রাসেলকে রিয়াদের এক রাস্তার পাশে অচেতন অবস্থায় ফেলে যায়। যাওয়ার সময় তারা রাসেলের হাতের ছাপ ও অ্যাকামা আইডি নিজেদের কাছে রেখে হুমকি দেয় যে ঘটনা প্রকাশ হলে তার ক্ষতি করা হবে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় নিরাপদে এসে পরিবারকে সবকিছু জানানোর পর তার শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন।

তদন্তে সিআইডি প্রথমে অপহরণকারীদের দেওয়া সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও এমএফএস নম্বর বিশ্লেষণ করে। এসব বিশ্লেষণে উঠে আসে, গ্রেফতার মো. জিয়াউর রহমান এই অর্থ লেনদেন চক্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, সৌদি আরবে থাকা অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগসাজশে মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন পেয়েছেন।

তদন্তে সিআইডি প্রথমে অপহরণকারীদের দেওয়া সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও এমএফএস নম্বর বিশ্লেষণ করে। এসব বিশ্লেষণে উঠে আসে, গ্রেফতার মো. জিয়াউর রহমান এই অর্থ লেনদেন চক্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, সৌদি আরবে থাকা অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগসাজশে মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন পেয়েছেন।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন আরও জানান, এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। এরই মধ্যে গ্রেফতার ২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে। চক্রের বাকি সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের স্বার্থে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত আছে।