মোহাম্মদপুরে মা–মেয়ে হত্যা: স্বামীর সহায়তায় ঢাকা ছাড়েন গৃহকর্মী আয়েশা, আরও যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল পুলিশ
- আপডেট: ০৬:২৬:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ১৮০১৪
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়ে হত্যার ঘটনায় মূল আসামি গৃহকর্মী আয়েশা ও তার স্বামী রাব্বীকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে,চুরি করে পালানোর সময় বাধা দেওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। হত্যার পর গৃহকর্মী আয়েশা তার স্বামীর সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করলে স্বামী তাকে ঢাকা থেকে পালাতে সহায়তা করেন। পরে আবার রাব্বীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই আয়েশাকে গ্রেফতার করা হয়।
তেজগাঁও বিভাগের এডিসি মোহাম্মাদ জুয়েল রানা জানিয়েছেন, প্রথমে ঢাকার সাভার এলাকা থেকে আয়েশার স্বামীকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই নলছিটি থেকে হাতেনাতে আয়েশাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান এডিসি জুয়েল রানা। এ ছাড়া তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। হত্যাকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাকেও গ্রেফতার দেখানো হবে।
এডিসি মোহাম্মাদ জুয়েল রানা আরও জানান,ক্লু-লেস এই জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে ৬ মাস আগে মোহাম্মাদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকার একটি বাসায় চুরিও করেছিলেন আয়েশা।
জানা যায়,গ্রেফতারকৃত আয়েশা নরসিংদী সদর থানার সলিমগঞ্জ এলাকার রবিউল ইসলামের মেয়ে। বর্তমানে তিনি সাভারের হেমায়েতপুর পূর্বহাটি এলাকায় ভাড়া বাসায় স্বামী রাব্বি সিকদারকে নিয়ে থাকতেন। হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাটি গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হলে রাব্বি তাদের ছোট সন্তানের কথা ভেবে স্ত্রীকে নিয়ে দাদাবাড়িতে পালিয়ে যায়। সেখান থেকেই আজ তাকে গ্রেফতার করা হয়।
নলছিটি থানার ওসি আশরাফ আলী বলেন,‘আয়েশার স্বামীর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিস্তারিত ঢাকা থেকে জানাবে।’
গত সোমবার মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে লায়লা ফিরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজের (১৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জোড়া হত্যার ঘটনায় সোমবার রাতে গৃহকর্মী আয়েশাকে একমাত্র আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী স্কুলশিক্ষক আ জ ম আজিজুল ইসলাম।
মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন,গত ৪ দিন আগে আসামী আমার বাসায় খন্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে। সোমবার সকাল অনুমানিক ৭টার দিকে সময় আমি আমার কর্মস্থল উত্তরায় চলে যাই। আমি আমার কর্মস্থলে উপস্থিত থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরবর্তীতে আমি নিরুপায় হয়ে বেলা অনুমানিক ১১টার দিকে বাসায় ফেরত এসে দেখি,আমার স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে এবং আমার মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বাসার মেইন গেটে পড়ে আছে। আমার মেয়ের এই অবস্থা দেখে দ্রুত আমি তাকে উদ্ধার করে পরিছন্নকর্মী মো.আশিক এর মাধ্যমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি। আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এজাহারে তিনি আরও বলেন,আমি বাসার সিসি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখতে পাই যে,আসামী ওইদিন সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে কাজ করার জন্য বাসায় আসে এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আমার মেয়ের স্কুল ড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় ১টি মোবাইল,১টি ল্যাপটপ, স্বর্ণালঙ্কার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যায়।





















