০৮:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

শান্তির বার্তা ছড়িয়ে ঢাকায় বিশ্ব আশেকে রাসুল সম্মেলন অনুষ্ঠিত

  • আপডেট: ০৬:০০:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ১৮০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশ–বিদেশের লক্ষাধিক মানুষের অংশগ্রহণে রাজধানীর আরামবাগে শুক্রবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন ২০২৫। প্রখ্যাত সমাজ ও ধর্মীয় সংস্কারক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মোহাম্মদী ইসলামের প্রবর্তক হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.)–এর ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এই মহাসম্মেলন শান্তি, সম্প্রীতি ও সুফিবাদের মর্মবাণিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।

সম্মেলনের আহ্বায়ক ও দেওয়ানবাগী হুজুরের উত্তরসূরি ইমাম প্রফেসর ড.কুদরত এ খোদা (মা. আ.) দেশের বিভিন্ন স্থানে মাজার, দরবার ও সুফিবাদীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সব বিভেদ ভুলে সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “সারা পৃথিবী দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলার বিরুদ্ধেও দাঁড়িয়েছে; কিন্তু তিনি কখনোই সুফিবাদের শান্তির বাণি প্রচার বন্ধ করেননি।”

বক্তব্যে ইমাম কুদরত এ খোদা স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে দেওয়ানবাগী হুজুরের অবদান, আধ্যাত্মিক সাধনা এবং রিপুর দাসত্ব থেকে মানুষকে মুক্ত করতে তাঁর আজীবন প্রচেষ্টার কথা। তিনি বলেন, “চরিত্রবান হতে হলে আল্লাহর অলীদের কাছে যাওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। যেমন পরীক্ষায় পাস করতে শিক্ষকের কাছে যেতে হয়, তেমনি আল্লাহকে পেতে অলীদের দরবারে যেতে হয়।”

সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম, গবেষক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, ড. পিয়ার মোহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসানসহ দেশবরেণ্য আলেম, শিক্ষক, গবেষক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিশিষ্টজনরা বক্তব্য রাখেন।

ভোর সাড়ে ৩টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলা এই আয়োজনে মোরাকাবা, মিলাদ, হামদ–নাত, জুম্মার নামাজ, দোয়া–মোনাজাত, গবেষণামূলক আলোচনা ও স্মারকগ্রন্থ উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়। পুরো প্রাঙ্গণ ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ, ইয়া হাবিবআল্লাহ্’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।

বক্তারা হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর জীবনদর্শন স্মরণ করে বলেন, তাঁর আত্মশুদ্ধির শিক্ষা আজ বিশ্বের শতাধিক দেশে প্রচারিত হচ্ছে এবং কোটি মানুষকে পরিবর্তনের পথে নিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য জীবনী তুলে ধরে বক্তারা জানান, ১৯৪৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করা দেওয়ানবাগী হুজুর ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। পরে আধ্যাত্মিক সাধনায় নিমগ্ন হয়ে ১৯৮৫ সালে নারায়ণগঞ্জের দেওয়ানবাগে দরবার শরিফ প্রতিষ্ঠা করেন, যা থেকে তাঁর ‘দেওয়ানবাগী’ পরিচিতি অর্জন।

তাঁর প্রতিষ্ঠিত ১১টি দরবার এবং বিশ্বের শতাধিক দেশে সহস্রাধিক খানকা ও জাকের মজলিশ আজও তাঁর চার মূল শিক্ষা—আত্মশুদ্ধি, দিলজিন্দা, নামাজে হুজুরি ও আশেকে রাসুল হওয়ার শিক্ষা—ছড়িয়ে দিচ্ছে।

২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর ইন্তেকালের আগে তিনি তাঁর মেজো ছেলে ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা হুজুরকে মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার ও দরবার পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন। বর্তমানে তিনি বিশ্বব্যাপী সুফিবাদের শান্তির বার্তা ছড়িয়ে যাচ্ছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

শান্তির বার্তা ছড়িয়ে ঢাকায় বিশ্ব আশেকে রাসুল সম্মেলন অনুষ্ঠিত

আপডেট: ০৬:০০:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশ–বিদেশের লক্ষাধিক মানুষের অংশগ্রহণে রাজধানীর আরামবাগে শুক্রবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন ২০২৫। প্রখ্যাত সমাজ ও ধর্মীয় সংস্কারক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মোহাম্মদী ইসলামের প্রবর্তক হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.)–এর ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এই মহাসম্মেলন শান্তি, সম্প্রীতি ও সুফিবাদের মর্মবাণিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।

সম্মেলনের আহ্বায়ক ও দেওয়ানবাগী হুজুরের উত্তরসূরি ইমাম প্রফেসর ড.কুদরত এ খোদা (মা. আ.) দেশের বিভিন্ন স্থানে মাজার, দরবার ও সুফিবাদীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সব বিভেদ ভুলে সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “সারা পৃথিবী দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলার বিরুদ্ধেও দাঁড়িয়েছে; কিন্তু তিনি কখনোই সুফিবাদের শান্তির বাণি প্রচার বন্ধ করেননি।”

বক্তব্যে ইমাম কুদরত এ খোদা স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে দেওয়ানবাগী হুজুরের অবদান, আধ্যাত্মিক সাধনা এবং রিপুর দাসত্ব থেকে মানুষকে মুক্ত করতে তাঁর আজীবন প্রচেষ্টার কথা। তিনি বলেন, “চরিত্রবান হতে হলে আল্লাহর অলীদের কাছে যাওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। যেমন পরীক্ষায় পাস করতে শিক্ষকের কাছে যেতে হয়, তেমনি আল্লাহকে পেতে অলীদের দরবারে যেতে হয়।”

সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম, গবেষক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, ড. পিয়ার মোহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসানসহ দেশবরেণ্য আলেম, শিক্ষক, গবেষক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিশিষ্টজনরা বক্তব্য রাখেন।

ভোর সাড়ে ৩টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলা এই আয়োজনে মোরাকাবা, মিলাদ, হামদ–নাত, জুম্মার নামাজ, দোয়া–মোনাজাত, গবেষণামূলক আলোচনা ও স্মারকগ্রন্থ উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়। পুরো প্রাঙ্গণ ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ, ইয়া হাবিবআল্লাহ্’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।

বক্তারা হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর জীবনদর্শন স্মরণ করে বলেন, তাঁর আত্মশুদ্ধির শিক্ষা আজ বিশ্বের শতাধিক দেশে প্রচারিত হচ্ছে এবং কোটি মানুষকে পরিবর্তনের পথে নিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য জীবনী তুলে ধরে বক্তারা জানান, ১৯৪৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করা দেওয়ানবাগী হুজুর ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। পরে আধ্যাত্মিক সাধনায় নিমগ্ন হয়ে ১৯৮৫ সালে নারায়ণগঞ্জের দেওয়ানবাগে দরবার শরিফ প্রতিষ্ঠা করেন, যা থেকে তাঁর ‘দেওয়ানবাগী’ পরিচিতি অর্জন।

তাঁর প্রতিষ্ঠিত ১১টি দরবার এবং বিশ্বের শতাধিক দেশে সহস্রাধিক খানকা ও জাকের মজলিশ আজও তাঁর চার মূল শিক্ষা—আত্মশুদ্ধি, দিলজিন্দা, নামাজে হুজুরি ও আশেকে রাসুল হওয়ার শিক্ষা—ছড়িয়ে দিচ্ছে।

২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর ইন্তেকালের আগে তিনি তাঁর মেজো ছেলে ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা হুজুরকে মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার ও দরবার পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন। বর্তমানে তিনি বিশ্বব্যাপী সুফিবাদের শান্তির বার্তা ছড়িয়ে যাচ্ছেন।