ছিনতাইয়ের সঙ্গীই হলো খুনি, পিবিআই জানাল জালাল হত্যার পেছনের গল্প
- আপডেট: ০৬:৪৮:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৮০১৩
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
ছিনতাইয়ের জন্য বেরিয়েছিল দুজন। কিন্তু ব্যর্থতার পরই বদলে যায় তাদের রূপরেখা। একসময়কার ছিনতাই-সঙ্গী পরিণত হয় খুনিতে। অটোরিকশার দখল নিতে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত বন্ধুর হাতেই প্রাণ হারাতে হয় কেরাণীগঞ্জের যুবক জালাল শিকদারকে।
ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের শুভাঢ্যা পূর্বপাড়া এলাকার একটি ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জালালের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর এই হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা জেলা। এ ঘটনায় জড়িত দুই আসামি মো.শেখ নুরু ও মো.মোজাম্মেল মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।
বুধবার(২২ অক্টোবর) রাজধানীর উত্তরা পিবিআই ঢাকা জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান,গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার শুভাঢ্যা পূর্ব পাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে পিবিআই ক্রাইম সিন টিম ভিকটিমের পরিচয় শনাক্ত করে স্বজনদের খবর দেয়। নিহত জালাল কেরাণীগঞ্জের কালিন্দী চড়াইল এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
তদন্তে পিবিআই জানতে পারে,নিহত জালাল ও আসামি নুরু দুজনেই পেশাদার ছিনতাইকারী। তারা প্রায়ই রাতে একসঙ্গে চুরি-ছিনতাই করতো। তবে ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে ছিনতাইয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর নিজেদের ব্যবহৃত অটোরিকশাটি দখলের পরিকল্পনা করে নুরু।
তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনে বলা হয়,২৬ সেপ্টেম্বর রাত ২টার দিকে জালাল তার ভাড়া বাসা থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তার স্ত্রী হনুফা বেগম পরদিন অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও ২৮ সেপ্টেম্বর পিবিআই ঢাকা জেলা তা স্বপ্রণোদিত হয়ে গ্রহণ করে।
গ্রেফতার নুরু পুলিশের কাছে স্বীকার করেন,সেদিন রাতে জালালকে ফোনে ডেকে কদমতলী এলাকায় দেখা করেন। তারা চুরি-ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বের হন,কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ফেরার পথে নুরু জালালের অটোরিকশা দখলের পরিকল্পনা করেন। এ সময় কদমতলী চুনকুটিয়ার এক দোকানে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে জালালকে খাওয়ান নুরু। অচেতন অবস্থায় জালালকে শুভাঢ্যা পূর্ব কামারপাড়া এলাকায় নিয়ে গিয়ে গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে তিনি। পরে লাশটি ডোবায় ফেলে দেন।
এরপর অটোরিকশাটি চালিয়ে নুরু রায়েরবাগ এলাকায় গিয়ে অপর আসামি মোজাম্মেল মোল্লার কাছে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
পিবিআই জানায়,রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে দুই আসামিই হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।




















