১০:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫

ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপির একাধিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বিস্ফোরক মামলা,আতঙ্কে বোয়ালমারীজুড়ে

  • আপডেট: ১০:০৬:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৮০০১

নিজস্ব প্রতিবেদক,সোনালী খবর

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। এতে ফরিদপুর-১ আসনের একাধিক সম্ভাব্য বিএনপি প্রার্থীকে আসামি হয়েছেন। এলাকাজুড়ে এখন চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রবিবার হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে একটিতে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম নাসিরকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে ১৮৭ জনের এবং অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে।

অন্যদিকে নাসিরুলপন্থীদের পক্ষে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এতে বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপি নেতা শামছুদ্দিন মিয়া ঝুনুকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। আর সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো.আবু জাফরকে ২ নম্বর ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আবুল কালাম আজাদকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন,’দুটি মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

জানা যায়,৭ নভেম্বর বিএনপির বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে স্থানীয় উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে একটি মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। একই সময়ে অপরপক্ষের নেতাকর্মীরাও পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে।
বিকাল চারটার দিকে মিছিলটি কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্সের সামনে পৌঁছালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ,ককটেল বিস্ফোরণ এবং দেশীয় অস্ত্র—রামদা,চাপাতি,লোহার রড ও বাঁশের লাঠি ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়।

হামলায় লিয়াকত শেখ, জাবের মোল্যা,লিপন মিয়া,ইমদাদুল হক ডাবলুসহ অন্তত ১০ জন গুরুতর জখম হন। এছাড়া শপিং কমপ্লেক্সের সামনে রাখা নয়টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৮ লাখ টাকা বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলামের দায়ের করা মামলাটি থানার মামলা নম্বর ১১। এতে দণ্ডবিধির ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩২৩/৪৩৫/৪২৭ ধারা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ১৮৮৪ সালের ৩/৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

অন্যদিকে,বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে হামলা,অগ্নিসংযোগ, গুরুতর জখম ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট ৪৩৭ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছে। এতে ১৮৭ জন নামীয় এবং ২০০ থেকে ২৫০ জন অজ্ঞাত আসামি রয়েছেন।
মামলার বাদী মজিবর রহমান বাবু। এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালায়, হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর ও অগ্নিসংযোগ করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ টাকা। এই মামলায় দণ্ডবিধির ১৪৩, ৪৪৮, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৪৩৫, ৪৩৬, ৪২৭, ৫০৬(২), ১১৪ ধারা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ১৯০৮ সালের ৩/৪ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে।

এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন খন্দকার নাসিরুল ইসলাম,খন্দকার নাজমুল ইসলাম,খন্দকার মামুন,ইমরান বিশ্বাস,সিরাজুল ইসলাম,রবিউল ইসলাম সম্রাট,নাজমুল শেখ, মিন্টু শেখ ও সাইফুল ইসলাম বকুলসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা।

পুলিশ বলছে,দু’টি মামলাই তদন্তাধীন,পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপির একাধিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বিস্ফোরক মামলা,আতঙ্কে বোয়ালমারীজুড়ে

আপডেট: ১০:০৬:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,সোনালী খবর

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। এতে ফরিদপুর-১ আসনের একাধিক সম্ভাব্য বিএনপি প্রার্থীকে আসামি হয়েছেন। এলাকাজুড়ে এখন চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রবিবার হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে একটিতে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম নাসিরকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে ১৮৭ জনের এবং অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে।

অন্যদিকে নাসিরুলপন্থীদের পক্ষে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এতে বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপি নেতা শামছুদ্দিন মিয়া ঝুনুকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। আর সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো.আবু জাফরকে ২ নম্বর ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আবুল কালাম আজাদকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন,’দুটি মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

জানা যায়,৭ নভেম্বর বিএনপির বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে স্থানীয় উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে একটি মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। একই সময়ে অপরপক্ষের নেতাকর্মীরাও পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে।
বিকাল চারটার দিকে মিছিলটি কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্সের সামনে পৌঁছালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ,ককটেল বিস্ফোরণ এবং দেশীয় অস্ত্র—রামদা,চাপাতি,লোহার রড ও বাঁশের লাঠি ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়।

হামলায় লিয়াকত শেখ, জাবের মোল্যা,লিপন মিয়া,ইমদাদুল হক ডাবলুসহ অন্তত ১০ জন গুরুতর জখম হন। এছাড়া শপিং কমপ্লেক্সের সামনে রাখা নয়টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৮ লাখ টাকা বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলামের দায়ের করা মামলাটি থানার মামলা নম্বর ১১। এতে দণ্ডবিধির ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩২৩/৪৩৫/৪২৭ ধারা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ১৮৮৪ সালের ৩/৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

অন্যদিকে,বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে হামলা,অগ্নিসংযোগ, গুরুতর জখম ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট ৪৩৭ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছে। এতে ১৮৭ জন নামীয় এবং ২০০ থেকে ২৫০ জন অজ্ঞাত আসামি রয়েছেন।
মামলার বাদী মজিবর রহমান বাবু। এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালায়, হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর ও অগ্নিসংযোগ করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ টাকা। এই মামলায় দণ্ডবিধির ১৪৩, ৪৪৮, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৪৩৫, ৪৩৬, ৪২৭, ৫০৬(২), ১১৪ ধারা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ১৯০৮ সালের ৩/৪ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে।

এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন খন্দকার নাসিরুল ইসলাম,খন্দকার নাজমুল ইসলাম,খন্দকার মামুন,ইমরান বিশ্বাস,সিরাজুল ইসলাম,রবিউল ইসলাম সম্রাট,নাজমুল শেখ, মিন্টু শেখ ও সাইফুল ইসলাম বকুলসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা।

পুলিশ বলছে,দু’টি মামলাই তদন্তাধীন,পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।