১১:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

পালাতে গিয়ে ধরা: বর্ষায় থাকেন দুবাই, শীতকালে দেশে এসে ডাকাতি করতেন শফিকুল

  • আপডেট: ০৮:২৫:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৮০০৪

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

১৭টি মামলা মাথায় নিয়ে দুবাই পালানোর পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ডাকাত সর্দার শফিকুল ইসলামকে (৪১) গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি বলছে,শফিকুল ইসলাম আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সর্দার। তিনি বছরের অর্ধেক সময় বিশেষ করে বাংলাদেশের বর্ষা মৌসুমে দুবাইয়ে অবস্থান করতেন। বাকি সময় থাকতেন দেশে। মূলত তিনি শীতকালকে ডাকাতির উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন।

সোমবার (১০ নভেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান,গত ২ নভেম্বর দিবাগত রাত ২টা ২৫ মিনিটের দিকে ১০-১২ জনের একটি ডাকাতদল গাজীপুরের পশ্চিম ধীরাশ্রমের একটি বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতি করে। সিআইডি সেই মামলার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করলে ডাকাতদলের প্রধান হিসেবে শফিকুল ইসলামকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। শফিকুলের নামে ডাকাতিসহ মোট ১৭টি মামলা রয়েছে। গত ৯ নভেম্বর দুবাই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে শফিকুল ইসলামকে সিআইডির গাজীপুর জেলা ও মেট্রো ইউনিট বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে।

তিনি বলেন,ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে গৃহকর্তা মো.আব্দুল সোবহান,তার স্ত্রী,ছোট বোন,নাতি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বেঁধে ফেলে। পরে তারা স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোনসহ প্রায় ২২ লাখ ৭৬ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নেয়। এরপর গৃহকর্তার ছেলের ফ্ল্যাটেও ডাকাতি করে। পরে পার্শ্ববর্তী আরেকটি বাড়িতেও একই কায়দায় ডাকাতি করে। বাধা দিলে ডাকাতদের সঙ্গে থাকা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে আঘাত করলে বাড়ির কয়েকজন বাসিন্দা আহত হন। পরে এ ঘটনায় গৃহকর্তা আব্দুল সোবহান বাদী হয়ে জিএমপি সদর থানায় মামলা করেন।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন আরও বলেন,ডাকাতদলের মূলহোতা শফিকুল ইসলাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডাকতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এই ডাকাতি শেষে তিনি দুবাই চলে যেতে চেয়েছিলেন। তবে প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে শফিকুল ইসলাম আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সর্দার। তিনি বছরের অর্ধেক সময় বিশেষ করে বাংলাদেশের বর্ষা মৌসুমে দুবাইয়ে অবস্থান করতেন এবং বাকি সময় দেশে থাকতেন। মূলত তিনি শীতকালকে ডাকাতির উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন।

‘এই সময় তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা ডাকাতদের একত্র করে ডেমরার একটি পার্কে বসে কোথায় কোথায় ডাকাতি করা হবে সে বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরি করতেন। পরে পরিকল্পনা অনুসারে,তারা ডাকাতি শেষে সবাই দেশের নানান জায়গায় ছড়িয়ে গিয়ে একেকজন একেক পেশা অবলম্বন করে জীবিকা নির্বাহের ভান করতেন। তাদের মূল পেশা হচ্ছে ডাকাতি যা প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে।’

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন,বর্তমানে মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম সিআইডির গাজীপুর জেলা ও মেট্রো বিভাগ পরিচালনা করছে। ডাকাতির ঘটনায় শফিকুল ইসলাম ছাড়াও এরই মধ্যে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন,অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

পালাতে গিয়ে ধরা: বর্ষায় থাকেন দুবাই, শীতকালে দেশে এসে ডাকাতি করতেন শফিকুল

আপডেট: ০৮:২৫:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

১৭টি মামলা মাথায় নিয়ে দুবাই পালানোর পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ডাকাত সর্দার শফিকুল ইসলামকে (৪১) গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি বলছে,শফিকুল ইসলাম আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সর্দার। তিনি বছরের অর্ধেক সময় বিশেষ করে বাংলাদেশের বর্ষা মৌসুমে দুবাইয়ে অবস্থান করতেন। বাকি সময় থাকতেন দেশে। মূলত তিনি শীতকালকে ডাকাতির উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন।

সোমবার (১০ নভেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান,গত ২ নভেম্বর দিবাগত রাত ২টা ২৫ মিনিটের দিকে ১০-১২ জনের একটি ডাকাতদল গাজীপুরের পশ্চিম ধীরাশ্রমের একটি বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতি করে। সিআইডি সেই মামলার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করলে ডাকাতদলের প্রধান হিসেবে শফিকুল ইসলামকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। শফিকুলের নামে ডাকাতিসহ মোট ১৭টি মামলা রয়েছে। গত ৯ নভেম্বর দুবাই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে শফিকুল ইসলামকে সিআইডির গাজীপুর জেলা ও মেট্রো ইউনিট বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে।

তিনি বলেন,ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে গৃহকর্তা মো.আব্দুল সোবহান,তার স্ত্রী,ছোট বোন,নাতি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বেঁধে ফেলে। পরে তারা স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোনসহ প্রায় ২২ লাখ ৭৬ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নেয়। এরপর গৃহকর্তার ছেলের ফ্ল্যাটেও ডাকাতি করে। পরে পার্শ্ববর্তী আরেকটি বাড়িতেও একই কায়দায় ডাকাতি করে। বাধা দিলে ডাকাতদের সঙ্গে থাকা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে আঘাত করলে বাড়ির কয়েকজন বাসিন্দা আহত হন। পরে এ ঘটনায় গৃহকর্তা আব্দুল সোবহান বাদী হয়ে জিএমপি সদর থানায় মামলা করেন।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন আরও বলেন,ডাকাতদলের মূলহোতা শফিকুল ইসলাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডাকতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এই ডাকাতি শেষে তিনি দুবাই চলে যেতে চেয়েছিলেন। তবে প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে শফিকুল ইসলাম আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সর্দার। তিনি বছরের অর্ধেক সময় বিশেষ করে বাংলাদেশের বর্ষা মৌসুমে দুবাইয়ে অবস্থান করতেন এবং বাকি সময় দেশে থাকতেন। মূলত তিনি শীতকালকে ডাকাতির উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন।

‘এই সময় তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা ডাকাতদের একত্র করে ডেমরার একটি পার্কে বসে কোথায় কোথায় ডাকাতি করা হবে সে বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরি করতেন। পরে পরিকল্পনা অনুসারে,তারা ডাকাতি শেষে সবাই দেশের নানান জায়গায় ছড়িয়ে গিয়ে একেকজন একেক পেশা অবলম্বন করে জীবিকা নির্বাহের ভান করতেন। তাদের মূল পেশা হচ্ছে ডাকাতি যা প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে।’

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন,বর্তমানে মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম সিআইডির গাজীপুর জেলা ও মেট্রো বিভাগ পরিচালনা করছে। ডাকাতির ঘটনায় শফিকুল ইসলাম ছাড়াও এরই মধ্যে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন,অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।