জাগৃকের দুর্নীতিবাজ আনোয়ার দম্পত্তির কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ , দুদকে অভিযোগ

- আপডেট: ১০:৩৯:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
- / ২
আলমগীর মতিন চৌধুরী :
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের উচ্চমান সহকারী আনোয়ার হোসেন। সরকারি চাকরির পাশাপাশি তিনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের আওয়ামী সমর্থিত লোক হিসাবে সবার জানাশোনা। তার পদ তৃতীয় শ্রেণির, কিন্তু জীবনযাপন বিত্তশালীর মতো। থাকেন ডুপ্লেক্স বাড়িতে, চড়েন নামিদামি গাড়িতে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় অবৈধ সম্পদের বিষয়ে আনোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকে)। অভিযোগের সূত্রে জানা যায় রাজধানীর মিরপুরে সেনপাড়া মৌজায় একটি প্লট, মানিকগঞ্জ মেইন শহরে ১৪ শতাংশ জমি। এছাড়া তিনি বিনিয়োগ দেখিয়েছেন ৯ লক্ষ টাকা, স্বর্ণ দেখিয়েছে ১৫ ভরি, ব্যাংকে ডিপিএস এই প্রায় ১৮ লাখ। সর্বসাকুল্যে ৩৬ লক্ষ ৩৬ হাজার ১৭১ টাকার সম্পত্তি রয়েছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার তার স্ত্রী সামছুন্নাহারের সম্পত্তি আনোয়ারের চেয়েও কয়েক গুণ বেশি। নিম্নে তার ফিরিস্তি তুলে ধরা হলো। – ৩০/০৬/২০২৩ইং তারিখের আর্থিক বিবরণী তুলে ধরা হলোঃ
শামসুন নাহার এর সম্পদ এবং দায়বদ্ধতার বিবরণী (৩০.০৬.২০২৩ তারিখের হিসাবে) অনুযায়ি সেনপাড়া পর্বতায় অকৃষি জমির মূল্য ১৫,০০,০০০/- টাকা, অন্য আরেকটি জমির মূল্য ৩,৫০,০০০/- টাকা। সেনপাড়া, পার্বতায় উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত জমি ও বিনিয়োগ যার মূল্য ১৮,৬২,৫০০/- টাকা, সেনপাড়া, পার্বতায় একটি দোকান যার মূল্য ৮,৫৫,০০০/- টাকা এবং রূপনগর, মিরপুর, ঢাকায় সমতল জমির মূল্য ১১,০০,০০০/- টাকা।
কৃষি সম্পত্তি (আইনি খরচ সহ মূল্যে) সহ বিবরনে উল্লেখ আছে এফডিআর ১০,০০,০০০/- টাকা, অন্যান্য বিনিয়োগ ১০,০০,০০০/- টাকা, ১৫ ভরি স্বর্ণের গয়নার বর্তমান বাজার দর অনুয়ায়ি (২২ ক্যারেট) ২৫,৫৮,২৬৫ টাকা, আসবাবপত্র ১,০০,০০০ টাকা, ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ১,০০,০০০ টাকা। এছাড়া ব্যবসার বাইরে হাতে নগদ ১৭,৬৫০ টাকাসহ মোট ৬৮,৮৫,১৫০ টাকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তাছাড়া তার জামানতবিহীন ঋণ স্বামী থেকে প্রাপ্ত ৪,৮০,০০০ টাকা রয়েছে। তিনি বছর শেষে আয়ের নিট সম্পদ দেখান ৬৪,০৫,১৫০ টাকা এবং সম্পদ বৃদ্ধি দেখান ৫,০১,৮৮০/- টাকা এবং সবশেষে মোট সম্পদের পরিমান ৭,৩১৮৮০ টাকা বলে উল্লেখ করেন।
তাছাড়া সামছুন নাহার এর জেলা রেজিস্ট্রার সিরাজগঞ্জ কার্যালয়ের প্রধান সহকারীর এর টি.সি. শাখা হতে প্রাপ্ত সম্মানী ভাতার আয়কর কর্তনের পর দেখা যায় জুলাই/২০২২ মাসে পান ১৮০০টাকা, চালান নং- ৩৫২ তাং-০৫/০৭/২০২২ খ্রিঃ, আগষ্ট/২০২২ মাসে পান ১৮০০টাকা, চালান নং- ২২১ তাং-০৩/০৮/২০২২ খ্রিঃ, সেপ্টেঃ/২০২২ মাসে পান ১৮০০ টাকা, চালান নং- ১৩২ তাং- ০১/০৯/২০২২ খ্রিঃ, অক্টোঃ/২০২২ মাসে পান ১৮০০টাকা, চালান নং- ১১৯ তাং- ১০/১০/২০২৩ খ্রিঃ, নভেঃ/২০২২ মাসে পান ১৮০০টাকা, চালান নং-২২৯ তাং-০৯/১১/২০২২ খ্রিঃ, ডিসেঃ/২০২২ মাসে পান ১৮০০ টাকা, চালান নং-১৭১ তাং-০৫/১২/২০২২ খ্রিঃ, জানুঃ/২০২৩ মাসে পান ১৮০০ টাকা, চালান নং-৭৫ তাং-০৩/০১/২০২৩ খ্রিঃ, ফেব্রুঃ/২০২৩ মাসে পান ১৮০০ টাকা, চালান নং- ১৩৫ তাং-০৯/০২/২০২৩ খ্রিঃ, মার্চ/২০২৩ মাসে পান ১৮০০ টাকা, চালান নং- ৩১৮ তাং- ১৪/০৩/২০২৩ খ্রিঃ, এপ্রিল/২০২৩ মাসে পান ১৮০০ টাকা, চালান নং- ১২৩ তাং- ৯/০৪/২০২৩ খ্রিঃ, মে/২০২৩ মাসে পান ১৮০০ টাকা, চালান নং- ৬১ তাং- ২২/০৫/২০২৩ খ্রিঃ, জুন/২০২৩ মাসে পান ১৮০০ টাকা, চালান নং- ২৬৪ তাং-১৩/০৬/২০২৩ খ্রিঃ।
তার বিষয়ে ও তার আত্মীয় শ্যালক রফিক সহ তার অফিসের সকলেরই তার আপন আত্মীয় হওয়ায় গোটা অফিস কে তারা নিজেদের পৈত্রিক সম্পতি মনে করেন । তারা নিয়মিত গ্রাহকদের হয়রানি করেই যাচ্ছেন। তার কয়েক জন ব্যক্তিগত দালাল রয়েছে যারা আনোয়ার হোসেনকে কাজ ম্যানেজ করে দেন এবং অবৈধ লেনদেন করে থাকেন। আনোয়ার হোসেন ও তার পরিবারের প্রত্যেক সদস্যদের নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে উল্লেখ্য যে, আনোয়ার হোসেন এর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য আওয়ামী লীগ এর সঙ্গে জড়িত। সেই ‘ক্ষমতা ব্যবহার করে আনোয়ার হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যগণ বিভিন্ন মানুষকে হয়রানি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে তদবির বানিজ্য করে গত ১৬ বছর ‘তারা কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। আনোয়ার হোসেন ও তার পরিবারে সদস্যগণ এখনও আওয়ামীলীগের পলাতক নেতাদের অর্থ যোগান দিয়ে যাচ্ছেন। আনোয়ার হোসেন এর এক আত্মীয় ও সাংবাদিক নেতা থাকায় তার মাধ্যমে তিনি সাংবাদিকদের বিষয়টি সমাধান করেন এবং যে সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন এর সঙ্গে আপোষ করেন না। তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আনোয়ারের বিরুদ্ধে দুদক অনুসন্ধানে দেরী করলে আনোয়ার পালিয়ে যেতে পারে। অনুসন্ধানে জানা যায়, পতিত সরকারের আমলে মাস্টার রোলে চাকরি পান আনোয়ার হোসেন। বিগত সরকারের আমলে আনোয়ার অবৈধভাবে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অর্থের বিনিময়ে হিসাব সহকারী পদে চাকুরি নেন। আওয়ামী লীগ সরকারের দোষর জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ (ডুইপ), মিরপুর- ২, ঢাকা এর কেরানী আনোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী সামছুন নাহার সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিষ্টার কাযালয় কেরানী, অবৈধভাবে ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা মালিক বনে গেছে। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ (ডুইপ), মিরপুর- ২, ঢাকায় হিসাব সহকারী পদে কর্মরত আনোয়ার হোসেন জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ৫৫২২২৮৯৩৬১, জন্ম তারিখ- ১৭ অক্টোবর ১৯৭১ইং, টিআইএন না ৭৯৯১৯৭১৯৯২৫৮, কর সার্ভে সার্কেল- ২, ঢাকা । দরিদ্র পিতা মোঃ কফিল উদ্দিন নামীয় ব্যক্তির ছেলে। আনোয়ারের মায়ের নাম লজ্জা বেগম। স্ত্রীর সামছুন নাহার, সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিষ্টার কার্যালয় হিসাব সহকারী হিসাবে কাজ করেন। সামছুন নাহারের জাতীয় পরিচয়পত্র নং-৪৬২২৪০৫২০৯, জন্ম তারিখ- ০৮/০১/১৯৭৩ইং, টিআইএ নং- ৪৯০৪৪৫১১৭৪৩১, কর সার্ভে সার্কেল- ২, ঢাকা। সাহাজ উদ্দিন মাহেরা খাতুনের সন্তান। বাসা নং- ২৬, রোড নং- ০৯ রূপনগর আবাসিক এলাকা মিরপুর, ঢাকা । এই বাসার বাসার ২য় তলার পৃর্বদিকের ফ্ল্যাটটি তার স্ত্রীর নামে ক্রয় করেছে আনোয়ার হোসেন। ফ্ল্যাটটি বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকার উপরে বিল্ডিং এর অপর মালিক জানিয়েছেন। তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে স্থায়ী ঠিকানা ইসলামপুর উত্তর পাড়া, ডাকঘর: জিয়নপুর- ১৮৫০, উপজেল দৌলতপুর, জেলা: মানিকগঞ্জ। কিন্তু মোঃ আনোয়ার হোসেন এর পূর্বের টিআইএন নং-০৮২১১৪৭৮৬১ গত ২৩/০৯/২০১৩ইং তারিখে ডিজিটাল টিআইএন রূপান্তর করেন। এবং তার স্ত্রী-সামচুন নাহারের পূর্বে টিআইএন নং- ০৮২১১৪৭৮৭৮ টি গত ২৩/০৯/২০১৩ইং তারিখে ডিজিটাল টিআইএন রূপান্তর করেন উপরোক্ত দুজনেরই টিআইএন এ স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় বসবাস করেন। সামছুন নাহার আনোয়ার হোসেন স্বামী স্ত্রী দুর্নীতিবাজ সরকারি চাকুরে। অনিয়মে এই দম্পতি কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক। জাতীয় গৃহায়নের দুর্নীতি সিন্ডিকেটের মুলহোতা আনোয়ার দম্পতি কোটি কোটি টাকার মালিক হবার বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে একাধিক বার সংবাদ পরিবেশন হলেও সে আছে মহা আনন্দে। আনোয়ার হোসেন ১৪/ডি, মিরপুর- ১৪, রাকিন সিটি সংলগ্ন একটি প্লট হাতিয়ে নিয়েছে নিজ নামে। ভুয়া তথ্য দিয়ে পুলিশ স্টাফ কলেজের বিপরীত পাশে শ্যালকের নামে একটি সরকারী ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছে। তার মিরপুর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১২ নাম্বার একাধিক প্লট, ফ্ল্যাট বাড়ী রয়েছে। মোঃ আনোয়ার হোসেন দুর্নীতিবাজ জাতীয় গৃহায়নের চিহ্নিত মাফিয়া ডন জাতীয় গৃহায়নের নথি লুকিয়ে রেখে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখিয়ে নথির মধ্যে বিভিন্ন ভুলভ্রান্তি ধরিয়ে দিয়ে গ্রাহকদের নিকট প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধভাবে তিনি ও তার স্ত্রী কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিকানা বনে গেছে। আত্মীয় শ্যালক রফিকসহ তার অফিসের সকলেই গোটা অফিস নিজের পৈত্রিক সম্পতি বানিয়ে নিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে নিয়মিত গ্রাহকদের হয়রানি করেই যাচ্ছে আনোয়ার চক্র। আনোয়ার হোসেন মিষ্টিভাষী ক্ষমতাধর ব্যক্তি মাফিয়া ডন। জাতীয় গৃহায়নের প্লট জালজালিয়াতির মূল হোতা কারিগর আনোয়ার চক্র। এ বিষয়ে আনোয়ারকে একাধিকবার তার ব্যক্তিগত ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। একাধিকবার মেসেজ পাঠানো হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। তার অফিসে একাধিকবার গিয়েও সেটি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। জনস্বার্থে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ অসাধু কর্মচারি আনোয়ারে বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যথাযর্থ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।