০৩:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

সোনাইমুড়িতে জমি নিয়ে বিরোধে যুবক হত্যা:রাজধানী থেকে মামলার এজাহারনামীয় আসামি গ্রেফতার

সোনালী খবর
সোনালী খবর
  • আপডেট: ১০:৫৯:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
  • /

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর এক হত্যা মামলার ৭ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি মো.মহিন (৪৪) কে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩,নোয়াখালী।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১১,সিপিসি-৩,নোয়াখালী ও র‌্যাব-২,সিপিসি-৩, আগারগাঁও, ঢাকা এর একটি যৌথ আভিযানিক দল বৃহস্পতিবার ( ২৪ জুলাই) দুপুর আনুমানিক ১২টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় অভিযান

শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাতে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মিঠুন কুমার কুণ্ডু।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়,নিহত মো.কামরুল হুদা (৪৩) ছিলেন মামলার বাদিনীর স্বামী। ভিকটিমের সঙ্গে অভিযুক্তদের বিগত কয়েক বছর ধরে জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ১০ জুন ২০২৫ তারিখে আসামিরা জোরপূর্বক তার বাড়ির পাশে প্রায় দেড় লাখ টাকার গাছ কেটে ফেলে। এতে বাধা দিলে ভিকটিমকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
এরপর ২০ জুন ২০২৫ তারিখে স্থানীয়দের নিয়ে এক বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই ১৯ জুন রাতে এজাহারনামীয় আসামিরা ০১ নম্বর আসামির বাড়িতে গোপনে বৈঠক করে। ওই রাতেই রাত ৯টার দিকে কামরুল হুদা ঘর থেকে জমির কাগজপত্র নিয়ে স্থানীয় বাচ্চু মুহুরীর সঙ্গে পরামর্শ করতে বের হলে আসামিরা তার পেছনে অনুসরণ করে।

রাত ৯টা ৩০ মিনিটে স্ত্রী তাকে ফোন করলে ভিকটিম ভীত কণ্ঠে জানায়,আসামিরা তার পেছনে রয়েছে এবং পরে ফোন দেবে। এরপর রাত ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত কোনো খোঁজ না পেয়ে বাদিনী স্বজনদের জানালে তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। রাত ১২টার পরেও কামরুল বাড়ি না ফেরায় বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে।

এর তিন দিন পর, ২২ জুন দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে জানা যায়,সোনাইমুড়ীর বারগাঁও ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মোল্লাপাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুরে একটি অর্ধগলিত মৃতদেহ ভাসছে। মৃতদেহের পরিহিত গেঞ্জি দেখে বাদিনী তা তার স্বামীর বলে শনাক্ত করেন।
পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী সদর হাসপাতালে পাঠায়। সুরতহালে নিহতের গলা,বুক,হাত,কোমর ও হাঁটুতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।
বাদিনীর অভিযোগ অনুযায়ী, ১৯ জুন রাত ৯টা থেকে ২২ জুন দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে কোনো এক সময় অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে, সম্ভবত অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সহায়তায় পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে রেখে দেয়।

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামিরা গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে ছিল। এরপর র‌্যাব-১১,সিপিসি-৩, নোয়াখালী গোয়েন্দা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল পলাতকদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য। অবশেষে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় অবস্থান শনাক্ত করে মো. মহিনকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার নাম-ঠিকানা নিশ্চিত করে এবং মামলার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। পরবর্তীতে তাকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএমপি’র তেজগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

সোনাইমুড়িতে জমি নিয়ে বিরোধে যুবক হত্যা:রাজধানী থেকে মামলার এজাহারনামীয় আসামি গ্রেফতার

আপডেট: ১০:৫৯:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর এক হত্যা মামলার ৭ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি মো.মহিন (৪৪) কে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩,নোয়াখালী।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১১,সিপিসি-৩,নোয়াখালী ও র‌্যাব-২,সিপিসি-৩, আগারগাঁও, ঢাকা এর একটি যৌথ আভিযানিক দল বৃহস্পতিবার ( ২৪ জুলাই) দুপুর আনুমানিক ১২টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় অভিযান

শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাতে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মিঠুন কুমার কুণ্ডু।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়,নিহত মো.কামরুল হুদা (৪৩) ছিলেন মামলার বাদিনীর স্বামী। ভিকটিমের সঙ্গে অভিযুক্তদের বিগত কয়েক বছর ধরে জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ১০ জুন ২০২৫ তারিখে আসামিরা জোরপূর্বক তার বাড়ির পাশে প্রায় দেড় লাখ টাকার গাছ কেটে ফেলে। এতে বাধা দিলে ভিকটিমকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
এরপর ২০ জুন ২০২৫ তারিখে স্থানীয়দের নিয়ে এক বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই ১৯ জুন রাতে এজাহারনামীয় আসামিরা ০১ নম্বর আসামির বাড়িতে গোপনে বৈঠক করে। ওই রাতেই রাত ৯টার দিকে কামরুল হুদা ঘর থেকে জমির কাগজপত্র নিয়ে স্থানীয় বাচ্চু মুহুরীর সঙ্গে পরামর্শ করতে বের হলে আসামিরা তার পেছনে অনুসরণ করে।

রাত ৯টা ৩০ মিনিটে স্ত্রী তাকে ফোন করলে ভিকটিম ভীত কণ্ঠে জানায়,আসামিরা তার পেছনে রয়েছে এবং পরে ফোন দেবে। এরপর রাত ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত কোনো খোঁজ না পেয়ে বাদিনী স্বজনদের জানালে তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। রাত ১২টার পরেও কামরুল বাড়ি না ফেরায় বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে।

এর তিন দিন পর, ২২ জুন দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে জানা যায়,সোনাইমুড়ীর বারগাঁও ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মোল্লাপাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুরে একটি অর্ধগলিত মৃতদেহ ভাসছে। মৃতদেহের পরিহিত গেঞ্জি দেখে বাদিনী তা তার স্বামীর বলে শনাক্ত করেন।
পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী সদর হাসপাতালে পাঠায়। সুরতহালে নিহতের গলা,বুক,হাত,কোমর ও হাঁটুতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।
বাদিনীর অভিযোগ অনুযায়ী, ১৯ জুন রাত ৯টা থেকে ২২ জুন দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে কোনো এক সময় অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে, সম্ভবত অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সহায়তায় পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে রেখে দেয়।

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামিরা গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে ছিল। এরপর র‌্যাব-১১,সিপিসি-৩, নোয়াখালী গোয়েন্দা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল পলাতকদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য। অবশেষে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় অবস্থান শনাক্ত করে মো. মহিনকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার নাম-ঠিকানা নিশ্চিত করে এবং মামলার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। পরবর্তীতে তাকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএমপি’র তেজগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।