জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক কর্মকর্তা একরামুল কবীরের সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতি

- আপডেট: ১১:৫৩:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫
- / ১৮০১৬
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে সাধারণ মানুষের আবাসন নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিনে অভিযোগ প্রতিষ্ঠানটির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনিয়মে বাগিয়ে নিচ্ছেন প্লট-ফ্ল্যাট। প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি, কমিশন বাণিজ্য ও ঠিকাদারদের সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। তাদের দায়িত্ব অবহেলা অনিয়মের কারণে বেদখল হয়ে যাচ্ছে জাতীয় গৃহায়ণের জমি ও সম্পদ। রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে দেখার যেন কেউ নেই! জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হচ্ছেন চেয়ারম্যান। কারণে অকারণে এই পদে ঘন ঘন পরিবর্তন করা হয়। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়মে গড়ে উঠা সিন্ডিকেট ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এমনি একজন হলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা একরামুল কবীর। জাতীয় গৃহায়ণের প্রশাসনিক কর্মকর্তা একরামুল কবীর সাথে সাথে সিলেট হাউজিং স্ট্রেট, সিলেটের সহকারি পরিচালক (ডুইপ) ঢাকাতে অতিরিক্ত দায়িত্ব পাল করছেন। দুই জায়গায় দায়িত্ব পালনের কারণে মোঃ একরামুল কবীর সপ্তাহে দুইদিন বাংলাদেশ বিমানে ঢাকা-সিলেট-ঢাকা আসা-যাওয়া করছেন। আসা যাওয়ায় বিমান ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় করেন বলে জানাগেছে। ২০২৪ইং সনে জুলাই বিপ্লবের ফলে চেয়ারম্যান নুরুল বাসীর প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে থাকা একরামুল কবীর কে বদলী করেন। পরবর্তীতে একরামুল কবীর ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল বাসীরকে ম্যানেজ করে আদেশ পরিবর্তন করেন। ঢাকায় দুইপ প্রকল্পে সহকারী পরিচালক পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের অফিস আদেশ জারী পাশ করায় বলে অভিযোগ রয়েছে একরামুলের বিরুদ্ধে। অথচ সহকারী পরিচালক ডুইপ নামে কোন পদই নেই। এই পদের লোভে পরে সরাসরি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করার হীন মানসে একটি রিট মামলা করে। রিটে উল্লেখ্য করে সহকারী পরিচালক পদে ১০% কোটা সংরক্ষণ রাখতে হবে। যেখানে মাত্র একবছর আগে এ কোটার বিরোধিতা করে হাজার-হাজার শিক্ষার্থী শহীদ হন। শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করে নিয়োগের বিরুদ্ধে একটি আবার রীট করিয়েছে। সেখানে প্রস্তাব রেখেছে শতকরা ১০ ভাগ কোটা সংরক্ষণ আদেশ বহাল জন্য। জাতীয় গৃহায়নে প্রশাসনিক পদে চাকরি করার সুবাদে একরামুল কবীর নিয়মে অনিয়মে নামে বেনামে গড়ে তুলেছেন কোটিকোটি টাকার সহায় সম্পদ। সুচতুর একরামুল কবীর কিছুদিন আগে একটি ব্রান্ড নিউ প্রিমিও গাড়ি পারভেজ আহম্মেদ নামীয় ব্যক্তির নামে ক্রয় করেছেন। গাড়ি কেনার পর থেকে একরামুল পারিবারিক ভাবে নিজেই ফুল টাইম ব্যবহার করছে। গাড়িটি পারভেজ আহম্মেদের‘র বলা হলেও সেটা তার ট্যাক্স ফাইলে দেখানো নেই। আলোচিত এই গাড়ির নম্বর ঢাকা মেট্টো-গ, ৪৭-৮৬২৬। গাড়িটি একরামুল কবীর এর মোবাইল নাম্বারে জিপিআরএস ট্যাকিং সিস্টেম চালু কেনো এমন প্রশ্নের উত্তরে একরামুল কি উত্তর দিবেন। একরামুল কবীর প্রতি মাসে সব মিলিয়ে বেতন পায় ৬০ হাজার। অথচ তার বড় মেয়ে প্রাইভেট মেডিকেলে পড়ছে যাহাতে ভর্তি হতে এককালীন ৩২ লক্ষ টাকা প্রদান করতে হয়েছে। প্রতি বছর সেশন ফি বাবদ প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ও মাসিক বেতন ৭০ হাজার টাকা প্রদান করতে হয়। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক কর্মকর্তা একরামুলের অন্য ৩ ছেলে-মেয়ে ঢাকার নামী-দামী ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াশোনা করছে। যাহা অত্যন্ত ব্যয়-বহুল। বিগত সরকারের প্রভাব খাটিয়ে একরামুল জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের আওতায় গৃহায়ণ দোলন চাপায় ১৮৫০ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট অনিয়ম করে গ্রেডেশন তালিকা ব্যত্যয় করে বরাদ্ধ নিয়েছে। যাহাতে প্রতি বছর ৭ লক্ষ টাকা কিস্তি প্রদান করতে হয়। একরামুল জামালপুর সমিতি হতে ১৫০০ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছে। একরামুল কবীরের স্ত্রী গৃহীনি হওয়ার স্বত্বেও তাজমহল রোডে ২টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছে। এইগুলোর সম্পূর্ণ অর্থ ঘুষ বাণিজ্য করে অর্জন করেছে, এতে কোন সন্দেহ নেই। গ্রামের বাড়িতে রয়েছে নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি ও এফডিআর। এতে তার মাসিক খরচ ৪ লক্ষ টাকার বেশি। কি করে এতো অর্থ ব্যয় করছে যা একরামুলের জ্ঞাত আয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। একরামুল কবীরের সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইেিতামধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তার অর্জিত সম্পদের বিষয়ে জরুরী তদন্তের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর আবেদন করেছে তূক্তভোগিরা। দুর্নীতিবাজ একরামুল কবীরকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আরো অনেক চাঞ্চল্য কর তথ্য বেরিয়ে আসবে। দোষী যেই হোক, তার শাস্তি হোক। প্রশাসনে স্বচ্চতা ফিরে আসুক। দেশে প্রতিষ্ঠিত হোক সুশাসন এমনটিই প্রতিবেদনের প্রত্যাশা।