১২১১৯ হারানো অস্ত্রের মধ্যে ৯৭৯৪টি উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী

- আপডেট: ০৯:৩৭:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ১৮০০৮
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ১২ হাজার ১১৯টি হারানো অস্ত্রের মধ্যে ৯ হাজার ৭৯৪টি অস্ত্র এবং ৩ লাখ ৯০ হাজার রাউন্ড গোলাবারুদের মধ্যে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫৯ রাউন্ড উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক কর্নেল মো.শফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন,চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেফতার ও অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার অভিযানে গত এক মাসে সেনাবাহিনী ৬৫টি অবৈধ অস্ত্র ও ২৯৭ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত এ পর্যন্ত মোট ১৭ হাজার ৯২৬ জন এবং গত এক মাসে ১ হাজার ২৯৪ জনকে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছে। যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাত, চাঁদাবাজসহ অন্যান্য অপরাধী উল্লেখযোগ্য।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী গত ১৩ আগস্ট রাজধানীর কলাবাগান এলাকার চিহ্নিত তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ নাহিদ মাহমুদ, ১৫ আগস্ট মেহেরপুরের মুজিবনগর এলাকার তালিকাভুক্ত কুখ্যাত ডাকাত মো. ইমন আলী ওরফে ইমন ডাকাত, ২২ আগস্ট , চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া এলাকার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী গ্যাং লিডার শফিউল এবং গত ৩ সেপ্টেম্বর মেহেরপুরের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি আকাশকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরকদ্রব্যসহ গ্রেফতার করেছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে গত ৩১ আগস্ট রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের সন্নিকটে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীর রাতে ভাড়া বাসায় গমনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাপ্রহরীর সঙ্গে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এবং সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করাসহ কিছু পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। পরে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় রাত আনুমানিক ৩টায় সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একত্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় পার্টির কর্মীদের মধ্যে বিজয়নগরে সংঘর্ষের ঘটনায় কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় গত আগস্ট কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে সেনাবাহিনীর সাহায্যের জন্য অনুরোধ করে। সেনাবাহিনী ওই স্থানে পৌঁছানোর পর উত্তেজিত নেতাকর্মীদের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিহার করতে বারবার অনুরোধ জানায় এবং পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসে। পরে বিশৃঙ্খলাকারীরা মশাল, লাঠি ও ইট পাটকেল নিয়ে অবস্থান গ্রহণ করে পুনরায় সহিংসতা শুরু করে।
তারা একাধিক স্থানে অগ্নিসংযোগ করে এবং সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে সেনাবাহিনীর ৫ সদস্য এবং পুলিশের ৬ সদস্য গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর একটি পিকআপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে রাত সাড়ে ৯টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
তিনি আরও বলেন, গত এক মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামে মোট ৮টি গোয়েন্দা তথ্য নির্ভর অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে মোট ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬১ রাউন্ড অ্যামোনিশন এবং মাদকসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। অভিযানগুলোতে মোট ৩৭ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে ১৭ জন জেএসএস সদস্য, ২ জন ইউপিডিএফ সদস্য, একজন এমএলপি সদস্য, চারজন মাদক কারবারি, দুজন মানবপাচারকারী এবং ১১ জন বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ আগস্ট খাগড়াছড়ি রিজিয়নের আওতাধীন শান্তিনগর এলাকায় এমএলপির বিরুদ্ধে একটি অভিযানে মোট ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৪ রাউন্ড অ্যামোনিশন এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও সেনাবাহিনী গত ২৫ জুলাই থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত দীর্ঘ এক মাসব্যাপী বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কেএনএর একটি সুরক্ষিত প্রশিক্ষণ ঘাটি চিহ্নিত ও ধ্বংস করে। অভিযানকালে তাদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।