০৭:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

এইচএসসি’র ফলাফলে চরম ধস

  • আপডেট: ০২:৩৮:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৮০২৯

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ. ২০২ প্রতিষ্ঠান পাশ শূণ্য.

আলমগীর মতিন চৌধুরীঃ
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে ধস দেখা দিয়েছে। বিগত ১০ বছরের মধ্যে এবার পাসের হার সর্বনিম্ন। ফেল করেছেন পাঁচ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। সারা দেশে পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ। কমেছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় সারা দেশে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ১৮.৯৫ শতাংশ কম। এ বছর ৬৯ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৭৬ জন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সব শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফলাফল প্রকাশ করে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. খন্দকার এহসানুল কবির আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেছেন। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন পুরুষ ও ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন নারী শিক্ষার্থী। সারা দেশে ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর মধ্যে, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৬৪.৬২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫৯.৪০ শতাংশ, কুমিল্লায় ৪৮.৮৬ শতাংশ, যশোরে ৫০.২০ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৫২.৫৭ শতাংশ, বরিশালে ৬২.৫৭ শতাংশ, সিলেটে ৫১.৮৬ শতাংশ, দিনাজপুরে ৫৭.৪৯ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৫১.৫৪ শতাংশ। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৫.৬১ শতাংশ ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৬২.৫৭ শতাংশ। ১৬ অক্টোবর সকালে প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভয়াবহ এ ফল বিপর্যয়ের নেপথ্যে রয়েছে দেশের অসুস্থ্য রাজনীতি ও ইংরেজি বিষয়। এবার অধিকাংশ শিক্ষা বোর্ডে ইংরেজিতে পাসের হার ৬০ শতাংশের মধ্যে। শুধু ঢাকা ও বরিশাল বোর্ডের শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে পাসের হার ৭০ শতাংশের ঘরে। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, এবার পাসের হারে সবচেয়ে তলানিতে থাকা কুমিল্লা বোর্ডে ইংরেজিতে পাস করেছেন ৬৫ দশমিক ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। এছাড়া রাজশাহী বোর্ডে ইংরেজিতে ৬৮ দশমিক ৮২ শতাংশ, যশোরে ৫৪ দশমিক ৮২ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৬৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ, সিলেটে ৬৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৬৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং ময়মনসিংহে ৬১ দশমিক ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। ইংরেজিতে সবচেয়ে ভালো করেছে বরিশাল বোর্ডের শিক্ষার্থীরা। এ বোর্ডে ইংরেজিতে পাসের হার ৭৫ দশমিক ১৬ শতাংশ। তারপরেই রয়েছে ঢাকা বোর্ড। এ বোর্ডে ইংরেজিতে ৭৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ‘ইংরেজিতে শিক্ষার্থীরা খারাপ করেছে। বিশেষ করে যশোর বোর্ডে ইংরেজিতে সবচেয়ে বেশি ফেল করেছে। সেখানে ইংরেজিতে ফেলের হার ৪৫ শতাংশের বেশি। ঢাকা ও বরিশাল ইংরেজিতে কিছুটা ভালো করলেও অন্য বোর্ডগুলোতে খারাপ করায় গড় ফলাফলে পিছিয়ে গিয়েছি আমরা।’ এ বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। বিপরীতে পাসের হারে সবচেয়ে পেছনে রয়েছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। সবচেয়ে বেশি পাস করা ঢাকা শিক্ষা রোর্ডে মোট পাসের হার ৬৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম পাস করা কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৪৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এবছর গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ, অর্থাৎ ফেল করেছেন ৪১ দশমিক ১৭ শতাংশ। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী। দেশের ২০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের পাসের হার শূন্য। গত বছর শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৬৫টি। এবারও পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে সব দিক দিয়ে এগিয়ে ছাত্রীরা। এ বছর ছাত্রীদের পাসের হার প্রায় ৬৩ শতাংশ। আর ছাত্রদের পাসের হার প্রায় ৫৫ শতাংশ।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এইচএসসি’র ফলাফলে চরম ধস

আপডেট: ০২:৩৮:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ. ২০২ প্রতিষ্ঠান পাশ শূণ্য.

আলমগীর মতিন চৌধুরীঃ
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে ধস দেখা দিয়েছে। বিগত ১০ বছরের মধ্যে এবার পাসের হার সর্বনিম্ন। ফেল করেছেন পাঁচ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। সারা দেশে পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ। কমেছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় সারা দেশে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ১৮.৯৫ শতাংশ কম। এ বছর ৬৯ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৭৬ জন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সব শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফলাফল প্রকাশ করে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. খন্দকার এহসানুল কবির আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেছেন। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন পুরুষ ও ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন নারী শিক্ষার্থী। সারা দেশে ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর মধ্যে, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৬৪.৬২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫৯.৪০ শতাংশ, কুমিল্লায় ৪৮.৮৬ শতাংশ, যশোরে ৫০.২০ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৫২.৫৭ শতাংশ, বরিশালে ৬২.৫৭ শতাংশ, সিলেটে ৫১.৮৬ শতাংশ, দিনাজপুরে ৫৭.৪৯ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৫১.৫৪ শতাংশ। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৫.৬১ শতাংশ ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৬২.৫৭ শতাংশ। ১৬ অক্টোবর সকালে প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভয়াবহ এ ফল বিপর্যয়ের নেপথ্যে রয়েছে দেশের অসুস্থ্য রাজনীতি ও ইংরেজি বিষয়। এবার অধিকাংশ শিক্ষা বোর্ডে ইংরেজিতে পাসের হার ৬০ শতাংশের মধ্যে। শুধু ঢাকা ও বরিশাল বোর্ডের শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে পাসের হার ৭০ শতাংশের ঘরে। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, এবার পাসের হারে সবচেয়ে তলানিতে থাকা কুমিল্লা বোর্ডে ইংরেজিতে পাস করেছেন ৬৫ দশমিক ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। এছাড়া রাজশাহী বোর্ডে ইংরেজিতে ৬৮ দশমিক ৮২ শতাংশ, যশোরে ৫৪ দশমিক ৮২ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৬৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ, সিলেটে ৬৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৬৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং ময়মনসিংহে ৬১ দশমিক ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। ইংরেজিতে সবচেয়ে ভালো করেছে বরিশাল বোর্ডের শিক্ষার্থীরা। এ বোর্ডে ইংরেজিতে পাসের হার ৭৫ দশমিক ১৬ শতাংশ। তারপরেই রয়েছে ঢাকা বোর্ড। এ বোর্ডে ইংরেজিতে ৭৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ‘ইংরেজিতে শিক্ষার্থীরা খারাপ করেছে। বিশেষ করে যশোর বোর্ডে ইংরেজিতে সবচেয়ে বেশি ফেল করেছে। সেখানে ইংরেজিতে ফেলের হার ৪৫ শতাংশের বেশি। ঢাকা ও বরিশাল ইংরেজিতে কিছুটা ভালো করলেও অন্য বোর্ডগুলোতে খারাপ করায় গড় ফলাফলে পিছিয়ে গিয়েছি আমরা।’ এ বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। বিপরীতে পাসের হারে সবচেয়ে পেছনে রয়েছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। সবচেয়ে বেশি পাস করা ঢাকা শিক্ষা রোর্ডে মোট পাসের হার ৬৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম পাস করা কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৪৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এবছর গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ, অর্থাৎ ফেল করেছেন ৪১ দশমিক ১৭ শতাংশ। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী। দেশের ২০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের পাসের হার শূন্য। গত বছর শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৬৫টি। এবারও পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে সব দিক দিয়ে এগিয়ে ছাত্রীরা। এ বছর ছাত্রীদের পাসের হার প্রায় ৬৩ শতাংশ। আর ছাত্রদের পাসের হার প্রায় ৫৫ শতাংশ।