০১:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

র‌্যাব–১৫–এ গণবদলি: ইয়াবা আত্মসাৎ, অনিয়ম ও বিতর্কিত অভিযান তদন্তে সরানো হলো অধিনায়ক–সহ তিন শতাধিক সদস্যকে

  • আপডেট: ১১:৩১:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৮০২০

কক্সবাজার প্রতিনিধ:

কক্সবাজার ও বান্দরবান নিয়ে গঠিত র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন–১৫ (র‌্যাব–১৫)-এ একযোগে তিন শতাধিক সদস্যকে বদলি করা হয়েছে। ইয়াবা জব্দে গড়মিল,আর্থিক অনিয়ম, তথ্য বিভ্রাট এবং দুটি আলোচিত অভিযানকে কেন্দ্র করে সদর দপ্তরের বিশেষ তদন্তের পর এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে র‌্যাবের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। তবে র‌্যাব মিডিয়া উইং দাবি করছে—এটি “নিয়মিত বদলি প্রক্রিয়া”।

র‌্যাব সদর দপ্তরের নথি অনুযায়ী, ১৯ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে ১৯৮ জন, একই দিনে আরেক প্রজ্ঞাপনে ২০০ জন এবং ২৭ নভেম্বর তৃতীয় দফায় আরও ৭৪ জন সদস্যকে বদলি করা হয়। প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনায় দেখা যায়, বদলি হওয়া তিন দফার মধ্যে তিন শতাধিক সদস্যই র‌্যাব–১৫–এর অন্তর্গত ছিলেন—যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নজিরবিহীন।

এক বছর দায়িত্ব পালনের পর র‌্যাব–১৫–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসানকে সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ নেয়ামুল হালিম খান, যিনি করোনাকালে যশোর সেনানিবাসে ৩৭ বীর ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন।

র‌্যাবের দাবি—‘নিয়মিত বদলি’, তবে তদন্ত বলছে অন্য কথা

র‌্যাব মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, ‘এটি নিয়মিত বদলি কার্যক্রম।’

তবে তিনি এটিও উল্লেখ করেন, ‘কেউ অপরাধে জড়িত থাকলে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

অন্যদিকে র‌্যাব–সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে র‌্যাব–১৫–কে ঘিরে ওঠা নানা অভিযোগের পর সদর দপ্তর ‘বিশেষ তদন্ত’ শুরু করে। এই তদন্তে দুটি আলোচিত অভিযানে গুরুতর অসঙ্গতি উঠে আসে। এর পরই গণবদলির সিদ্ধান্ত হয়।

গত ৭ সেপ্টেম্বর উখিয়ার কুতুপালং পশ্চিম পাড়ায় অভিযানে দুই নারীকে ৮৯ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা ও ১৬ লাখ ৭১ হাজার ৮৩০ টাকাসহ আটক দেখায় র‌্যাব–১৫।

কিন্তু অভিযোগ ওঠে প্রকৃত ইয়াবার সংখ্যা আরও বেশি ছিল। প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার ইয়াবা আত্মসাৎ করা হয়েছে। স্থানীয় যুবদল নেতা হেলাল উদ্দিনের সহযোগী সেলিম উদ্দিনকে ভুল তথ্য দিয়ে মামলায় জড়ানো হয়।

স্থানীয় সাংবাদিক সেলিম উদ্দিন বলেন,’একজন প্রকৃত মাদক কারবারির নাম আড়াল করতে আমার নাম জড়ানো হয়েছে।’

এই ঘটনাটি তদন্তে দেখতে নভেম্বরের শুরুতে সদর দপ্তরের একটি তদন্ত দল কক্সবাজার যায় বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

র‌্যাব–১৫–এ গণবদলি: ইয়াবা আত্মসাৎ, অনিয়ম ও বিতর্কিত অভিযান তদন্তে সরানো হলো অধিনায়ক–সহ তিন শতাধিক সদস্যকে

আপডেট: ১১:৩১:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫

কক্সবাজার প্রতিনিধ:

কক্সবাজার ও বান্দরবান নিয়ে গঠিত র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন–১৫ (র‌্যাব–১৫)-এ একযোগে তিন শতাধিক সদস্যকে বদলি করা হয়েছে। ইয়াবা জব্দে গড়মিল,আর্থিক অনিয়ম, তথ্য বিভ্রাট এবং দুটি আলোচিত অভিযানকে কেন্দ্র করে সদর দপ্তরের বিশেষ তদন্তের পর এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে র‌্যাবের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। তবে র‌্যাব মিডিয়া উইং দাবি করছে—এটি “নিয়মিত বদলি প্রক্রিয়া”।

র‌্যাব সদর দপ্তরের নথি অনুযায়ী, ১৯ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে ১৯৮ জন, একই দিনে আরেক প্রজ্ঞাপনে ২০০ জন এবং ২৭ নভেম্বর তৃতীয় দফায় আরও ৭৪ জন সদস্যকে বদলি করা হয়। প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনায় দেখা যায়, বদলি হওয়া তিন দফার মধ্যে তিন শতাধিক সদস্যই র‌্যাব–১৫–এর অন্তর্গত ছিলেন—যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নজিরবিহীন।

এক বছর দায়িত্ব পালনের পর র‌্যাব–১৫–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসানকে সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ নেয়ামুল হালিম খান, যিনি করোনাকালে যশোর সেনানিবাসে ৩৭ বীর ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন।

র‌্যাবের দাবি—‘নিয়মিত বদলি’, তবে তদন্ত বলছে অন্য কথা

র‌্যাব মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, ‘এটি নিয়মিত বদলি কার্যক্রম।’

তবে তিনি এটিও উল্লেখ করেন, ‘কেউ অপরাধে জড়িত থাকলে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

অন্যদিকে র‌্যাব–সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে র‌্যাব–১৫–কে ঘিরে ওঠা নানা অভিযোগের পর সদর দপ্তর ‘বিশেষ তদন্ত’ শুরু করে। এই তদন্তে দুটি আলোচিত অভিযানে গুরুতর অসঙ্গতি উঠে আসে। এর পরই গণবদলির সিদ্ধান্ত হয়।

গত ৭ সেপ্টেম্বর উখিয়ার কুতুপালং পশ্চিম পাড়ায় অভিযানে দুই নারীকে ৮৯ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা ও ১৬ লাখ ৭১ হাজার ৮৩০ টাকাসহ আটক দেখায় র‌্যাব–১৫।

কিন্তু অভিযোগ ওঠে প্রকৃত ইয়াবার সংখ্যা আরও বেশি ছিল। প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার ইয়াবা আত্মসাৎ করা হয়েছে। স্থানীয় যুবদল নেতা হেলাল উদ্দিনের সহযোগী সেলিম উদ্দিনকে ভুল তথ্য দিয়ে মামলায় জড়ানো হয়।

স্থানীয় সাংবাদিক সেলিম উদ্দিন বলেন,’একজন প্রকৃত মাদক কারবারির নাম আড়াল করতে আমার নাম জড়ানো হয়েছে।’

এই ঘটনাটি তদন্তে দেখতে নভেম্বরের শুরুতে সদর দপ্তরের একটি তদন্ত দল কক্সবাজার যায় বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছে।