মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা, হুন্ডি ও স্বর্ণ চোরাচালান–৬ জনের বিরুদ্ধে ৬০৮ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলা
- আপডেট: ০৩:৫৮:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৮০২৬
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা,হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনা এবং স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে প্রায় ৬০৮ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সিআইডি।
ডিএমপির কোতয়ালী থানায় দায়ের হওয়া এ মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা ৫ থেকে ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন— মনীন্দ্র নাথ বিশ্বাস,ওয়াহিদুজ্জামান,মো. গোলাম সারওয়ার আজাদ,মো.তরিকুল ইসলাম ওরফে রিপন ফকির, রাজীব সরদার এবং উজ্জ্বল কুমার সাধু।
বুধবার (১ অক্টোবর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এসব তথ্য জানান।
প্রতারণার কৌশল
সিআইডির অনুসন্ধানে জানা গেছে,মার্কিন নাগরিক ডেবোরাহ জন্সটন রামলো (ডেবি)-এর সঙ্গে প্রতারক চক্রটি যোগাযোগ স্থাপন করে DEA (Drug Enforcement Agency) এর পরিচয় দেয়। তারা প্রতারণা করে ২ লাখ ২২ হাজার ০০০ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা) আত্মসাৎ করে। পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে ভুক্তভোগীকে বাধ্য করা হয় আমেরিকায় অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে। এরপর বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা ব্যাংক একাউন্টে জমা নিত প্রতারক চক্র।
হুন্ডি কার্যক্রম ও ব্যাংক একাউন্ট
সিআইডির অনুসন্ধানে উঠে আসে,এ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে হুন্ডি কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তারা ‘আইনক্স ফ্যাশন’, ‘ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ’,‘জামান এন্টারপ্রাইজ’ ও ‘নোহা এন্টারপ্রাইজ’-এর নামে ব্যাংক একাউন্ট খুলে বিপুল অংকের অবৈধ লেনদেন করে। এসব একাউন্টের মধ্যে—ইউসিবিএলে আইনক্স ফ্যাশনের ১টি একাউন্ট, ঢাকা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, এবি ব্যাংক ও এনআরবিসি ব্যাংকে ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের ৪টি একাউন্ট,ব্র্যাক ব্যাংকে জামান এন্টারপ্রাইজের ১টি একাউন্ট, সাউথ-ইস্ট ব্যাংকে নোহা এন্টারপ্রাইজের ১টি একাউন্ট। এছাড়া মনীন্দ্র নাথ বিশ্বাসের ব্যক্তিগত একাউন্টেও জ্ঞাত আয়ের বাইরে লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
স্বর্ণ চোরাচালানেও জড়ির চক্রটি
প্রতারক চক্রটি শুধু হুন্ডি নয়,বরং দীর্ঘদিন ধরে স্বর্ণ চোরাচালানের সাথেও যুক্ত ছিল। তারা মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা যাত্রীদের নিকট থেকে এবং ঢাকার তাঁতীবাজারসহ বিভিন্ন দোকান থেকে ভাঙ্গারি স্বর্ণ সংগ্রহ করে তা গলিয়ে সোনার বার বানাত। এরপর এসব বার সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করা হতো।
সিআইডি জানায়,এ প্রতারক চক্রের মাধ্যমে ৬০৮ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ৩৭২ টাকা অবৈধভাবে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরিত হয়েছে। এসব অর্থ ভোগ-বিলাস, সম্পদ ক্রয় ও পাচারে ব্যবহৃত হয়েছে।
এর ভিত্তিতে ডিএমপি কোতয়ালী থানায় মামলা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সিআইডি জানিয়েছে,মামলার পূর্ণ রহস্য উদ্ঘাটন, অন্যান্য অজ্ঞাত আসামিদের সনাক্তকরণ এবং সকল আসামিকে আইনের আওতায় আনতে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।













