ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে শিক্ষকরা, বাধা পেয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ: ডিএমপি
- আপডেট: ০৬:৪৫:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
- / ১৮০০৭
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলনে থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা শনিবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান।
ডিএমপি জানায়,বিকাল ৩টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হওয়ার পর শিক্ষকরা ‘কলম সমর্পণ’কর্মসূচির অংশ হিসেবে শাহবাগ থানার সামনে জড়ো হন। বিকেল ৪টার দিকে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় পুলিশ বাধা দিলে আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকালে ডিএমপি মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়।ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষকদের একটি দল শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হয়। বিকাল আনুমানিক ৩টার সময় কিছু আন্দোলনকারী কলম সমর্পণের নামে শাহবাগ থানার সামনে জড়ো হয়। আনুমানিক ৪ ঘটিকার সময় আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে একটা দল পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ মোড় পার হয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ বাধা প্রদান করলে তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পুলিশের নির্দেশনা অমান্যকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পরবর্তীতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করে।
উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও সংলগ্ন এলাকায় সকল প্রকার সভা-সমাবেশ,মিছিল,গণজমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও আন্দোলনকারীরা তা উপেক্ষা করে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এসকল এলাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার জন্য সকলকে পুনরায় অনুরোধ করা হয়।
এর আগে,সকাল ৯টা থেকে শিক্ষকরা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। হাজারো শিক্ষক সেখানে জড়ো হয়ে অবস্থান নেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
আন্দোলনকারীরা জানান,সরকারি বিভিন্ন পদে সমমানের যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই দশম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন—যেমন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই),নার্স,উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ সচিব, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা। অথচ সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী হয়েও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা এখনও ১১তম গ্রেডে রয়েছেন। তাই দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের পর এবার তারা দশম গ্রেডে উন্নীতকরণসহ তিন দফা দাবিতে আবারও মাঠে নেমেছেন।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন,দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো সত্ত্বেও সরকারের আশ্বাস বাস্তবে রূপ নেয়নি। কয়েক দফা আন্দোলনের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ৭ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ে ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রস্তাব পাঠায়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়টি বাস্তবায়ন না করে তা পাঠিয়ে দেয় নবগঠিত পে-কমিশনে।
দুই মাস কেটে গেলেও কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় শিক্ষক নেতারা পে-কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে কমিশন জানায়,গ্রেড পরিবর্তনের এখতিয়ার তাদের নয়,এটি সার্ভিস কমিশনের বিষয়।
এ অবস্থায় শিক্ষকরা আবারও তাদের পুরোনো দাবি অর্থাৎ দশম গ্রেডে উন্নীতকরণের বিষয়টি সামনে এনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।




















