১০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

ডিলারশিপের প্রলোভনে ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া জাহাঙ্গীর গ্রেফতার

  • আপডেট: ০৭:২৮:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৮০০৩

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

ডিলারশিপ প্রদান ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের মূল হোতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারকৃতের নাম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন (৫২)।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে সিআইডি। বুধবার (২৯ অক্টোবর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দীন খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জসীম উদ্দীন খান বলেন,বিভিন্ন ভুক্তভোগী ব্যক্তির অভিযোগ ও সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে,গ্রেফতার জাহাঙ্গীর বিভিন্ন ভুয়া কনজ্যুমার ফুড প্রোডাক্টস কোম্পানির নামে ডিলারশিপ প্রদান ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছে। প্রতারণার কৌশল হিসেবে সে প্রথমে বিভিন্ন জায়গায় সুন্দর পরিপাটি অফিস ভাড়া নিত এবং সেখানে বিভিন্ন কনজ্যুমার প্রোডাক্টস মজুদ করত। এজন্য প্রথমে সে স্থানীয় খোলা বাজার থেকে ভালো গুণসম্পন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য (যেমন-চিনি,ডাল ইত্যাদি) কিনে সেগুলো ভুয়া নামীয় মোড়কে প্যাকেটজাত করে বাজারদর থেকে তুলনামূলক কম দামে পাইকারি ক্রেতাদের কাছে বিক্রয় করার জন্য বিজ্ঞাপন দিত।

তিনি বলেন,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও লিফলেট বিতরণ ও অন্যান্য গণমাধ্যমে ডিলারশিপের বিজ্ঞাপন প্রচার করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করত। আকৃষ্ট ক্রেতারা ডিলারশিপ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রথমে সে বাজারদর থেকে কম মূল্যে পণ্য সরবরাহ করত। এভাবে কিছুদিন মালামাল সরবরাহ করে বিশ্বাস অর্জন করার পরে আরও বড় ও সাশ্রয়ী অফার দিয়ে ডিলারদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা সংগ্রহ করে পণ্য না দিয়েই সে অফিস বন্ধ করে দিত।

তিনি বলেন,প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে— অর্ধযুগেরও বেশি সময় ধরে পরিচালিত এই প্রতারণার কাজে সে বিভিন্ন স্থানে ১৫টিরও বেশি ভুয়া অফিস খুলে সময়ে সময়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করেছে। মূলত কম দামে পণ্য সরবরাহ করার অফারই তার প্রতারণার মূল হাতিয়ার। সর্বশেষ ডিএমপির মোহাম্মদপুর এলাকার রেসিডেন্সিয়াল কলেজের পাশে অবস্থিত একটি বিল্ডিংয়ের ৪র্থ তলায় ‘তালুকদার এন্টারপ্রাইজ’নামের অফিস খুলে প্রতারণাকালীন সে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হয়।

সিআইডি-র মুখপাত্র বলেন,তার বিরুদ্ধে আজ মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও ২৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। সবগুলো মামলা প্রায় একই রকম প্রতারণাকেন্দ্রিক। ডিএমপির বিভিন্ন থানার পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ,টাঙ্গাইল,সিরাজগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় রুজু হওয়া এসব মামলায় অসংখ্য ভুক্তভোগী রয়েছে।

ডিলারশিপের পাশাপাশি চাকরি দেওয়ার নামেও জাহাঙ্গীর প্রতারণা করত জানিয়ে তিনি বলেন,শুধু ডিলারশিপ নয়, চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়েও প্রতারণার ঘটনা ঘটিয়েছে চক্রটি। অফিসের বিভিন্ন পদে লোভনীয় বেতনে চাকরি দেওয়ার নাম করে জীবন বৃত্তান্ত ও অন্যান্য তথ্যের পাশাপাশি চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিত। পরবর্তী সময়ে বেতন প্রদানের পূর্বেই রাতের আঁধারে অফিস বন্ধ করে গাঁ ঢাকা দিত।

তিনি বলেন,গ্রেফতার জাহাঙ্গীর বিগত অর্ধযুগেরও বেশি সময়ে অন্তত ৩০০ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এমন প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

গ্রেফতারকৃতর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

ডিলারশিপের প্রলোভনে ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া জাহাঙ্গীর গ্রেফতার

আপডেট: ০৭:২৮:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

ডিলারশিপ প্রদান ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের মূল হোতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারকৃতের নাম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন (৫২)।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে সিআইডি। বুধবার (২৯ অক্টোবর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দীন খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জসীম উদ্দীন খান বলেন,বিভিন্ন ভুক্তভোগী ব্যক্তির অভিযোগ ও সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে,গ্রেফতার জাহাঙ্গীর বিভিন্ন ভুয়া কনজ্যুমার ফুড প্রোডাক্টস কোম্পানির নামে ডিলারশিপ প্রদান ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছে। প্রতারণার কৌশল হিসেবে সে প্রথমে বিভিন্ন জায়গায় সুন্দর পরিপাটি অফিস ভাড়া নিত এবং সেখানে বিভিন্ন কনজ্যুমার প্রোডাক্টস মজুদ করত। এজন্য প্রথমে সে স্থানীয় খোলা বাজার থেকে ভালো গুণসম্পন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য (যেমন-চিনি,ডাল ইত্যাদি) কিনে সেগুলো ভুয়া নামীয় মোড়কে প্যাকেটজাত করে বাজারদর থেকে তুলনামূলক কম দামে পাইকারি ক্রেতাদের কাছে বিক্রয় করার জন্য বিজ্ঞাপন দিত।

তিনি বলেন,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও লিফলেট বিতরণ ও অন্যান্য গণমাধ্যমে ডিলারশিপের বিজ্ঞাপন প্রচার করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করত। আকৃষ্ট ক্রেতারা ডিলারশিপ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রথমে সে বাজারদর থেকে কম মূল্যে পণ্য সরবরাহ করত। এভাবে কিছুদিন মালামাল সরবরাহ করে বিশ্বাস অর্জন করার পরে আরও বড় ও সাশ্রয়ী অফার দিয়ে ডিলারদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা সংগ্রহ করে পণ্য না দিয়েই সে অফিস বন্ধ করে দিত।

তিনি বলেন,প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে— অর্ধযুগেরও বেশি সময় ধরে পরিচালিত এই প্রতারণার কাজে সে বিভিন্ন স্থানে ১৫টিরও বেশি ভুয়া অফিস খুলে সময়ে সময়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করেছে। মূলত কম দামে পণ্য সরবরাহ করার অফারই তার প্রতারণার মূল হাতিয়ার। সর্বশেষ ডিএমপির মোহাম্মদপুর এলাকার রেসিডেন্সিয়াল কলেজের পাশে অবস্থিত একটি বিল্ডিংয়ের ৪র্থ তলায় ‘তালুকদার এন্টারপ্রাইজ’নামের অফিস খুলে প্রতারণাকালীন সে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হয়।

সিআইডি-র মুখপাত্র বলেন,তার বিরুদ্ধে আজ মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও ২৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। সবগুলো মামলা প্রায় একই রকম প্রতারণাকেন্দ্রিক। ডিএমপির বিভিন্ন থানার পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ,টাঙ্গাইল,সিরাজগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় রুজু হওয়া এসব মামলায় অসংখ্য ভুক্তভোগী রয়েছে।

ডিলারশিপের পাশাপাশি চাকরি দেওয়ার নামেও জাহাঙ্গীর প্রতারণা করত জানিয়ে তিনি বলেন,শুধু ডিলারশিপ নয়, চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়েও প্রতারণার ঘটনা ঘটিয়েছে চক্রটি। অফিসের বিভিন্ন পদে লোভনীয় বেতনে চাকরি দেওয়ার নাম করে জীবন বৃত্তান্ত ও অন্যান্য তথ্যের পাশাপাশি চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিত। পরবর্তী সময়ে বেতন প্রদানের পূর্বেই রাতের আঁধারে অফিস বন্ধ করে গাঁ ঢাকা দিত।

তিনি বলেন,গ্রেফতার জাহাঙ্গীর বিগত অর্ধযুগেরও বেশি সময়ে অন্তত ৩০০ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এমন প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

গ্রেফতারকৃতর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।