১২:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কুষ্টিয়ার ইবি থানা এলাকা পুলিশ পরিচয়ে তৎপর ছিনতাই চক্র

  • আপডেট: ০১:১৬:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১৮০২০
মাসুম শাহরিয়ার, ইবি।
অভাবের সংসারে কিস্তি তুলে ইজিবাইক কিনে কোনরকম সংসারের হাল ধরেছিলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সাধুখালী গ্রামের আকতার হোসেন। প্রতিদিনের মত গত শুক্রবার (৮ আগস্ট)  ইজিবাইক নিয়ে বের হয়েছিলেন তিনি। কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ইবি থানাধীন মধুপুর এলাকা থেকে পুলিশ পরিচয়ে তার ইজিবাইকে উঠে ছিনতাই চক্রের এক সদস্য। এরপর তাকে ভাড়া করে নিয়ে যান একই থানাধীন শান্তিডাঙ্গা এলাকায়। সেখানে আসেন চক্রের আরেক সদস্য এরপর নিমিষেই ইজিবাইক ছিনতাই করে লাপাত্তা চক্রটি।
এতে করে উপার্জনের একমাত্র সম্বলটি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। তার পরিবারের লোকজনেরও পাগলপ্রায় অবস্থা। সবমিলিয়ে কঠিন সময়ের সম্মুখে তারা।
থানা এলাকার বিত্তিপাড়া এলাকা থেকে গত ১৭ জুলাই পুলিশ পরিচয়ে ইজিবাইকে উঠে শান্তিডাঙ্গা এলাকায় এসে আমির ইসলাম নামের এক ব্যক্তির ইজিবাইক ছিনতাই করে চক্রটি। একজন ইজিবাইক ভাড়া করলেও তিনজন মিলে ইজিবাইকটি ছিনতাই করেন বলে জানান ভুক্তভোগী। এ থানা এলাকায় এমন ঘটনা এখন যেন নিত্যদিনের। শুধু ইজিবাইক নয় একই কায়দায় ভ্যান ছিনতাইয়ের ঘটনা রয়েছে একাধিক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, থানা এলাকা ও পার্শ্ববর্তী  শৈলকুপা থানার বিভিন্ন এলাকা পুলিশ পরিচয়ে যাত্রী সেজে ইজিবাইক বা ভ্যান ভাড়া করে আনে চক্রটি। এরপর অজ্ঞান, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা সুকৌশলে ছিনিয়ে নেওয়া হয় ইজিবাইক বা ভ্যান।  বিগত কয়েক বছরে এমন প্রায় অর্ধশতাধিক ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে শৈলকুপা, গাড়াগঞ্জ ও শেখপাড়া এলাকা থেকে বেশিরভাগ ইজিবাইক ও ভ্যান ভাড়া করে এনে ইবি থানা এলাকা থেকে ছিনতাই করা হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ পরিচয়ে বাসতবাড়ি ও মহাসড়কে ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি থানার মধুপুর এলাকায় এক বাড়িতে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মহাসড়কে মোটরসাইকেল আরোহীকে থামিয়ে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা রয়েছে।
তবে এমন একাধিক ঘটনার পরেও এ চক্রকে শনাক্ত করতে ব্যর্থ পুলিশ। এসব ঘটনায় ইবি থানা ও শৈলকুপা থানায় বিভিন্ন সময় একাধিক অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা। তবে কোন আশার মুখ দেখেনি তারা। এতে করে পুলিশের প্রতি আস্থা হারিয়েছে অন্য ভুক্তভোগীরা। তাই বেশিরভাগ ঘটনায় অভিযোগ পর্যন্ত করেনি ভুক্তভোগীরা বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, থানায় অভিযোগ বা মামলা করে কোন সুরাহা হয় না। পুলিশের প্রতি আস্থা নেই তাদের।
সচেতন মহল মনে করেন, বরাবর একই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলেও পুলিশের ব্যর্থতায় অপরাধীদের শক্তি যোগাচ্ছে। দ্রুত এ চক্রকে শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব না হলে এধরণের কর্মকাণ্ড বাড়তে থাকবে। এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। এদিকে প্রতিনিয়ত একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে ইজিবাইক ও ভ্যান চালকদের মাঝে। তারা বলছেন, আতঙ্কে সময় কাটছে তাদের। প্রায় এমন ঘটনা ঘটে। দ্রুত এ চক্রকে শনাক্ত করে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করার দাবি তাদের
এবিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা ওসি (তদন্ত) মামুনুর রশীদ বলেন, পূর্বের ঘটনা আমার জানা নেই। আমি নতুন এসেছি। অপরাধীরা বিভিন্ন পরিচয়ে অপরাধ করে থাকে। আমরা তাদেরকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

কুষ্টিয়ার ইবি থানা এলাকা পুলিশ পরিচয়ে তৎপর ছিনতাই চক্র

আপডেট: ০১:১৬:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
মাসুম শাহরিয়ার, ইবি।
অভাবের সংসারে কিস্তি তুলে ইজিবাইক কিনে কোনরকম সংসারের হাল ধরেছিলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সাধুখালী গ্রামের আকতার হোসেন। প্রতিদিনের মত গত শুক্রবার (৮ আগস্ট)  ইজিবাইক নিয়ে বের হয়েছিলেন তিনি। কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ইবি থানাধীন মধুপুর এলাকা থেকে পুলিশ পরিচয়ে তার ইজিবাইকে উঠে ছিনতাই চক্রের এক সদস্য। এরপর তাকে ভাড়া করে নিয়ে যান একই থানাধীন শান্তিডাঙ্গা এলাকায়। সেখানে আসেন চক্রের আরেক সদস্য এরপর নিমিষেই ইজিবাইক ছিনতাই করে লাপাত্তা চক্রটি।
এতে করে উপার্জনের একমাত্র সম্বলটি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। তার পরিবারের লোকজনেরও পাগলপ্রায় অবস্থা। সবমিলিয়ে কঠিন সময়ের সম্মুখে তারা।
থানা এলাকার বিত্তিপাড়া এলাকা থেকে গত ১৭ জুলাই পুলিশ পরিচয়ে ইজিবাইকে উঠে শান্তিডাঙ্গা এলাকায় এসে আমির ইসলাম নামের এক ব্যক্তির ইজিবাইক ছিনতাই করে চক্রটি। একজন ইজিবাইক ভাড়া করলেও তিনজন মিলে ইজিবাইকটি ছিনতাই করেন বলে জানান ভুক্তভোগী। এ থানা এলাকায় এমন ঘটনা এখন যেন নিত্যদিনের। শুধু ইজিবাইক নয় একই কায়দায় ভ্যান ছিনতাইয়ের ঘটনা রয়েছে একাধিক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, থানা এলাকা ও পার্শ্ববর্তী  শৈলকুপা থানার বিভিন্ন এলাকা পুলিশ পরিচয়ে যাত্রী সেজে ইজিবাইক বা ভ্যান ভাড়া করে আনে চক্রটি। এরপর অজ্ঞান, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা সুকৌশলে ছিনিয়ে নেওয়া হয় ইজিবাইক বা ভ্যান।  বিগত কয়েক বছরে এমন প্রায় অর্ধশতাধিক ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে শৈলকুপা, গাড়াগঞ্জ ও শেখপাড়া এলাকা থেকে বেশিরভাগ ইজিবাইক ও ভ্যান ভাড়া করে এনে ইবি থানা এলাকা থেকে ছিনতাই করা হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ পরিচয়ে বাসতবাড়ি ও মহাসড়কে ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি থানার মধুপুর এলাকায় এক বাড়িতে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মহাসড়কে মোটরসাইকেল আরোহীকে থামিয়ে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা রয়েছে।
তবে এমন একাধিক ঘটনার পরেও এ চক্রকে শনাক্ত করতে ব্যর্থ পুলিশ। এসব ঘটনায় ইবি থানা ও শৈলকুপা থানায় বিভিন্ন সময় একাধিক অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা। তবে কোন আশার মুখ দেখেনি তারা। এতে করে পুলিশের প্রতি আস্থা হারিয়েছে অন্য ভুক্তভোগীরা। তাই বেশিরভাগ ঘটনায় অভিযোগ পর্যন্ত করেনি ভুক্তভোগীরা বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, থানায় অভিযোগ বা মামলা করে কোন সুরাহা হয় না। পুলিশের প্রতি আস্থা নেই তাদের।
সচেতন মহল মনে করেন, বরাবর একই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলেও পুলিশের ব্যর্থতায় অপরাধীদের শক্তি যোগাচ্ছে। দ্রুত এ চক্রকে শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব না হলে এধরণের কর্মকাণ্ড বাড়তে থাকবে। এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। এদিকে প্রতিনিয়ত একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে ইজিবাইক ও ভ্যান চালকদের মাঝে। তারা বলছেন, আতঙ্কে সময় কাটছে তাদের। প্রায় এমন ঘটনা ঘটে। দ্রুত এ চক্রকে শনাক্ত করে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করার দাবি তাদের
এবিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা ওসি (তদন্ত) মামুনুর রশীদ বলেন, পূর্বের ঘটনা আমার জানা নেই। আমি নতুন এসেছি। অপরাধীরা বিভিন্ন পরিচয়ে অপরাধ করে থাকে। আমরা তাদেরকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।