চাঁদাবাজির টাকায় ইয়ামাহা মোটরসাইকেল কিনেছিলেন অপু, জব্দ করল পুলিশ

- আপডেট: ০৬:২৪:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫
- / ১৮০০৪
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার জাতীয় নাগরিক পার্টির ছাত্র সংগঠন গনতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠনের বহিষ্কৃত নেতা যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুর বাসায় তল্লাশি চালিয়ে একটি দামী ইয়ামাহা মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাবেক এমপির বাসা থেকে চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্জিত টাকা দিয়ে অপু মোটরসাইকেলটি কিনেছিলেন বলে দাবী পুলিশের।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকালে ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
ডিএমপির গুলশান থানা সূত্রের বরাতে তিনি বলেন, শুক্রবার সকালে রাজধানীর গোপীবাগ এলাকা হতে অপুকে গ্রেফতার করে ডিবির একটি চৌকস টিম। একইদিন তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুর থানাধীন নবীনগর হাউজিং এর একটি বাসা থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়।
গুলশান থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত জানে আলম অপু চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে একটি ইয়ামাহা মোটরসাইকেল ক্রয় করেছে মর্মে স্বীকার করেছে । অপুসহ এই মামলায় এ পর্যন্ত মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনায় নগদ অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারের পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
তাদের নেতৃত্বে ছিলেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক (সদ্য বহিষ্কৃত) জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় হুমকি-ধামকি ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু, আর বাকি ৫ লাখ রিয়াদ।
পরবর্তীতে চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে পুলিশের ফাঁদে পড়ে চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেপ্তার হন। এরা হলেন_আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়া, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, আমিনুল ইসলাম।
তাদের সবাই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ও ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’-এর বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেফতারের পরপরই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয় তাদের।
এদিকে চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০/১২ জন সমন্বয় পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে পঞ্চাশ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেফতারের হুমকি দেয়।
একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই; এসময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকালে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এসময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরও ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।