১২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫

শেওড়াপাড়ায় গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু: গৃহবধূর লাশ নিয়ে স্বজনরা থানায়, স্বামীসহ ৯ জনের নামে মামলা

  • আপডেট: ১০:৪০:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১৮০০২

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

রাজধানীর মিরপুর শেওড়াপাড়ায় গৃহবধু ফাহমিদা তাহসিন কেয়ার (২৫) রহস্যজনক মৃত্যুর পর তার সন্তানদের মায়ের মরদেহ দেখতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।

পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ এনে স্বজনরা শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় লাশ নিয়ে মিরপুর থানার সামনে বিক্ষোভ করেছেন।

এদিকে,কেয়ার মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী সিফাত আলীসহ (৩০) নয়জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাত দুইটায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। নিহত কেয়ার মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় এ হত্যা মামলা করেন।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কেয়ার স্বামী সিফাত আলীকে। তবে এখনো কেউ ধরা পড়েনি। তবে,শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে,সিফাতকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ রোমান শুক্রবার জানান,নিহত কেয়ার মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে এজাহার দায়ের করেছেন। এজাহারটি হত্যা মামলা হিসেবে রুজু হয়েছে। মামলা কেয়ার স্বামী সিফাত ও তাদের গাড়িচালকসহ মোট নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।

নিহত কেয়ার ফুপা সামসুদ্দোহা জানান, কেয়ার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে শুক্রবার দুপুর দুইটায়। লাশ দাফনের জন্য নরসিংদী গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে। কিন্তু নিহতের সন্তান সাদিয়া (১১),সাঈদ (৭),সাজিদ (৫) ও দেড় বছরের সায়ানকে মিরপুর শামীম স্মরনির একটি বাসায় আটকে রাখা হয়েছে।

কেয়ার ফুপু শাশুড়ি দীপা ভূঁইয়া সন্তানদের মায়ের মরদেহ শেষবারের মতো সন্তানদের দেখতে দিচ্ছেন না। দীপা ভূইয়া হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি। অপর আসামি মাহাবুবও বাচ্চাদের সঙ্গে ওই বাসায় আছেন বলে দাবি করছেন সামসুদ্দোহা।

নিহত কেয়ার পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ,পারিবারিক কলহের জেরে কেয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার পর কৌশলে ফোনকল করে স্বজনদের জানিয়ে পালিয়ে যান সিফাত আলী।

নিহত কেয়ার ফুফু সৈয়দা ফাতেমা জাহান কলি জানান, বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সিফাত তার শাশুড়ি নাজমা বেগমকে ফোন করে জানান-কেয়া খুবই অসুস্থ। আপনারা বাসায় আসেন। কী হয়েছে জানতে চাইলে সিফাত একপর্যায়ে স্বীকার করেন যে ‘কেয়া আর বেঁচে নেই’।

এর পর নাজমা বেগম স্বামীসহ ওই বাসায় পৌঁছান। তারা সেখানে গিয়ে দেখেন সিফাত কেয়াকে নিয়ে পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে যাচ্ছেন। তখন সিফাতের বন্ধু কাজী মারুফ প্রেম, গৃহকর্মী মনির ও গাড়িচালক সঙ্গে ছিলেন। হাসপাতালে পৌঁছার পর চিকিৎসকরা কেয়াকে মৃত ঘোষণা করলে সিফাতসহ অন্যরা সেখান থেকে সটকে পড়ে। পরে নাজমা বেগম ও তার স্বামী বাসায় ফিরে দেখেন,সিফাত বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন। সিফাতের বাবা লিয়াকত আলী ভূঁইয়া হংকং প্রবাসী।

মিরপুর থানার এসআই রোকন সুরতাহালে লিখেছেন, ভিকটিম গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্নহত্যা করেছেন- তার এই বক্তব্যে নিহতের স্বজনেরা ক্ষোভ জানিয়ে পুলিশেল ভূঁমিকায় প্রশ্ন তুলে দাবি করছেন তিনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন-ভিকটিম নিজে গলায় ওড়না পেঁচিয়েছেন?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

শেওড়াপাড়ায় গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু: গৃহবধূর লাশ নিয়ে স্বজনরা থানায়, স্বামীসহ ৯ জনের নামে মামলা

আপডেট: ১০:৪০:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

রাজধানীর মিরপুর শেওড়াপাড়ায় গৃহবধু ফাহমিদা তাহসিন কেয়ার (২৫) রহস্যজনক মৃত্যুর পর তার সন্তানদের মায়ের মরদেহ দেখতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।

পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ এনে স্বজনরা শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় লাশ নিয়ে মিরপুর থানার সামনে বিক্ষোভ করেছেন।

এদিকে,কেয়ার মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী সিফাত আলীসহ (৩০) নয়জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাত দুইটায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। নিহত কেয়ার মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় এ হত্যা মামলা করেন।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কেয়ার স্বামী সিফাত আলীকে। তবে এখনো কেউ ধরা পড়েনি। তবে,শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে,সিফাতকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ রোমান শুক্রবার জানান,নিহত কেয়ার মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে এজাহার দায়ের করেছেন। এজাহারটি হত্যা মামলা হিসেবে রুজু হয়েছে। মামলা কেয়ার স্বামী সিফাত ও তাদের গাড়িচালকসহ মোট নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।

নিহত কেয়ার ফুপা সামসুদ্দোহা জানান, কেয়ার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে শুক্রবার দুপুর দুইটায়। লাশ দাফনের জন্য নরসিংদী গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে। কিন্তু নিহতের সন্তান সাদিয়া (১১),সাঈদ (৭),সাজিদ (৫) ও দেড় বছরের সায়ানকে মিরপুর শামীম স্মরনির একটি বাসায় আটকে রাখা হয়েছে।

কেয়ার ফুপু শাশুড়ি দীপা ভূঁইয়া সন্তানদের মায়ের মরদেহ শেষবারের মতো সন্তানদের দেখতে দিচ্ছেন না। দীপা ভূইয়া হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি। অপর আসামি মাহাবুবও বাচ্চাদের সঙ্গে ওই বাসায় আছেন বলে দাবি করছেন সামসুদ্দোহা।

নিহত কেয়ার পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ,পারিবারিক কলহের জেরে কেয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার পর কৌশলে ফোনকল করে স্বজনদের জানিয়ে পালিয়ে যান সিফাত আলী।

নিহত কেয়ার ফুফু সৈয়দা ফাতেমা জাহান কলি জানান, বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সিফাত তার শাশুড়ি নাজমা বেগমকে ফোন করে জানান-কেয়া খুবই অসুস্থ। আপনারা বাসায় আসেন। কী হয়েছে জানতে চাইলে সিফাত একপর্যায়ে স্বীকার করেন যে ‘কেয়া আর বেঁচে নেই’।

এর পর নাজমা বেগম স্বামীসহ ওই বাসায় পৌঁছান। তারা সেখানে গিয়ে দেখেন সিফাত কেয়াকে নিয়ে পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে যাচ্ছেন। তখন সিফাতের বন্ধু কাজী মারুফ প্রেম, গৃহকর্মী মনির ও গাড়িচালক সঙ্গে ছিলেন। হাসপাতালে পৌঁছার পর চিকিৎসকরা কেয়াকে মৃত ঘোষণা করলে সিফাতসহ অন্যরা সেখান থেকে সটকে পড়ে। পরে নাজমা বেগম ও তার স্বামী বাসায় ফিরে দেখেন,সিফাত বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন। সিফাতের বাবা লিয়াকত আলী ভূঁইয়া হংকং প্রবাসী।

মিরপুর থানার এসআই রোকন সুরতাহালে লিখেছেন, ভিকটিম গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্নহত্যা করেছেন- তার এই বক্তব্যে নিহতের স্বজনেরা ক্ষোভ জানিয়ে পুলিশেল ভূঁমিকায় প্রশ্ন তুলে দাবি করছেন তিনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন-ভিকটিম নিজে গলায় ওড়না পেঁচিয়েছেন?